প্রাচীন শৈল্পিক কারুকার্য খচিত মহাদেবপুরের শতবর্ষী মসজিদ
প্রকাশ: ৭ জুলাই, ২০২৫

নওগাঁর মহাদেবপুরে শতবর্ষের প্রাচীন শৈল্পিক কারুকার্য অঙ্কিত খাদেমোল মসজিদ। উপজেলা সদরের নাটশাল (চকচাঁদ) গ্রামে চুন-সুরকির তৈরি দৃষ্টিনন্দন এ মসজিদ দেখতে মানুষ দূর-দূরান্ত থেকে ছুটে আসেন।
এক শতাব্দী আগে বাংলা ১৩২৭ সালে নাটশাল (চকচাঁদ) গ্রামের ধনাঢ্য ব্যক্তি ও সমাজসেবক সরদার মোহাম্মদ মোকাররমের নেতৃত্বে মোছাম্মাৎ কাঁছমন্নেছা, মোছাম্মাৎ সবুজন্নেছার সহযোগিতায় এ মসজিদ নির্মাণের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়।
সেই সময়ে মসজিদের সৌন্দর্য বর্ধণের জন্য ভারতের মুর্শিদাবাদ এলাকার রাজমিস্ত্রি জৌলসুর রহমান ও একদল রাজমিস্ত্রি এনে মসজিদটি নির্মাণ কাজ শুরু করা হয়। তারা চকচাঁদ গ্রামে নিজস্ব ইটভাটায় ইট তৈরি করে এটি নির্মাণ করেন।
মসজিদের নির্মাণ কাজ চলাকালীন সরদার মোহাম্মদ মোকাররম মৃত্যুবরণ করলে তার পুত্রদ্বয় সরদার মোহাম্মদ ইউছুফ আলী ও সরদার মেছের উদ্দীন আহমাদ ১৩৩২ সালের ২৮ চৈত্র মসজিদের নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করেন।
বৃহস্পতিবার জোহরের নামাজের আগে কথা হয় মসজিদের ইমাম শিবরামপুর মধ্যপাড়া গ্রামের হাফেজ খাজাম উদ্দীনের সঙ্গে। তিনি বলেন, ১১ বছর ধরে এই মসজিদে ঈদ-জুমাসহ নিয়মিত ৫ ওয়াক্ত নামাজ পড়াচ্ছেন। দৃষ্টিনন্দন এ মসজিদে নামাজ পড়াতে পেরে তিনি গর্ববোধ করেন।
মরহুম সরদার মোহাম্মদ মোকাররমের নাতি সাইদুর রহমান লিটন জানান, কবরস্থানসহ ১ বিঘা জমির উপর চুন-সুরকি দিয়ে ১৪টি স্তম্ভবিশিষ্ট শৈল্পিক কারুকার্য অঙ্কিত এই মসজিদটি ১০০ বছর আগে তার পূর্ব-পুরুষরা তৈরি করে গেছেন।
দুই কক্ষবিশিষ্ট মসজিদটিতে ৬টি দরজা ও ৪টি জানালা রয়েছে। মসজিদের ছাদে রেললাইনের ইস্পাতের উপর চুন-সুরকি দিয়ে ঢালাই করা হয়েছে। এর ছাদের উপর ছোট-বড় অনেক মিনার সজ্জিত করা হয়েছে।
মসজিদের ভেতর ও বাহিরে প্রাচীন ইতিহাস ও ঐতিহ্যের শৈল্পিক কারুকার্যের নিদর্শনসহ বিভিন্ন ফুলগাছ দিয়ে সাজানো রয়েছে। মসজিদের দক্ষিণ পাশে তাদের পারিবারিক কবরস্থান রয়েছে। সেখানেই শায়িত আছেন নির্মাতারা।
ঈদে ও বিভিন্ন উৎসবে অন্য এলাকা থেকে প্রাচীন এ মসজিদট দেখতে আসেন দর্শনার্থীরা। আধুনিকতার ছোঁয়ায় চুন-সুরকির তৈরি প্রাচীন মসজিদগুলো হারিয়ে যাচ্ছে। তাই প্রাচীন এ মসজিদটি সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় সংরক্ষণের দাবি জানান এলাকাবাসী।