Advertisement
  • হোম
  • ধর্ম
  • ‘লাব্বাইক’ ধ্বনিতে মুখরিত আরাফাতের ময়দান

‘লাব্বাইক’ ধ্বনিতে মুখরিত আরাফাতের ময়দান

আমার সংবাদ

প্রকাশ: ২ জুলাই, ২০২৫

‘লাব্বাইক’ ধ্বনিতে মুখরিত আরাফাতের ময়দান
‘লাব্বাইক’ ধ্বনিতে মুখরিত আরাফাতের ময়দান

পবিত্র হজের মূল আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়েছে বৃহস্পতিবার (৫ জুন)। বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে আগত লাখো মুসলমান এখন অবস্থান করছেন মক্কার পার্শ্ববর্তী আরাফাতের পবিত্র ময়দানে। সমবেত মুসল্লিদের কণ্ঠে একত্রে উচ্চারিত হচ্ছে তাওহিদের প্রতিধ্বনি— ‘লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক, লা শারিকা লাকা লাব্বাইক’, যা মুখরিত করে তুলেছে পুরো আরাফাত ময়দান।

এর আগে বুধবার মিনায় রাত যাপন করেন হজযাত্রীরা। আজ ভোরে তারা ফজরের নামাজ শেষে রওনা হন আরাফাতের উদ্দেশে। সেখানে দুপুরে মসজিদে নামিরা থেকে দেওয়া হয় হজের খুতবা।

এবারের খুতবা প্রদান করেন পবিত্র মসজিদুল হারামের ইমাম ও খতিব শায়খ ড. সালেহ বিন হুমাইদ। টানা ষষ্ঠবারের মতো এবারও এই খুতবা বাংলাসহ বিশ্বের ৩৪টি ভাষায় সম্প্রচার করা হয়। বাংলা অনুবাদ উপস্থাপন করেন মক্কার উম্মুল কুরা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী ড. মুহাম্মদ খলীলুর রহমান।

হাদিস অনুযায়ী, আরাফাতের ময়দানে অবস্থান করাই হজের মূল রুকন। আজকের দিনটিকে কেন্দ্র করেই ইসলামের পঞ্চম স্তম্ভ হজ সম্পন্ন হয়। মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) এখানেই দিয়েছিলেন ঐতিহাসিক বিদায় হজের ভাষণ। কোরআনের ভাষায়, এই ময়দানে আল্লাহ পাক ইসলামকে পূর্ণাঙ্গ জীবনব্যবস্থা হিসেবে ঘোষণা দেন— “আজ তোমাদের জন্য তোমাদের দ্বীনকে পূর্ণাঙ্গ করলাম এবং তোমাদের প্রতি আমার নিয়ামত পরিপূর্ণ করলাম এবং ইসলামকেই তোমাদের জন্য দ্বীন হিসেবে মনোনীত করলাম।” (সুরা মায়েদা, আয়াত: ৩)

হজের আনুষ্ঠানিকতা ও পরবর্তী কার্যক্রম

আজ আরাফাতের ময়দানে জোহর ও আসরের নামাজ একসঙ্গে আদায় করে সূর্যাস্ত পর্যন্ত দোয়া-মোনাজাতে মগ্ন থাকবেন হাজিরা। এরপর তারা যাবেন মুজদালিফায়, যেখানে একত্রে মাগরিব ও এশার নামাজ আদায় করে রাত্রি যাপন করবেন।

শুক্রবার মিনায় ফিরে গিয়ে তারা বড় জামারায় শয়তানকে প্রতীকী পাথর নিক্ষেপ করবেন, এরপর কোরবানি, মাথা মুন্ডন ও ইহরাম খোলার মাধ্যমে একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ সম্পন্ন হবে। এরপর হাজিরা মক্কায় ফিরে গিয়ে পবিত্র কাবা শরিফ তাওয়াফ ও সাফা-মারওয়ায় সাঈ করবেন। তারপর আবার মিনায় ফিরে গিয়ে ১১ ও ১২ জিলহজ (চাইলে ১৩ তারিখও) তিন জামারায় পাথর নিক্ষেপ করবেন। সবশেষে কাবা শরিফে বিদায়ি তাওয়াফের মাধ্যমে শেষ হবে হজের সকল আনুষ্ঠানিকতা।

বাংলাদেশি হজযাত্রীর সংখ্যা ও পরিস্থিতি

সৌদি আরবের হজ ও ওমরাহ মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, এ বছর বিশ্বের প্রায় ১৫ লাখ মুসলমান হজ পালন করছেন। বাংলাদেশ থেকে গিয়েছেন ৮৬ হাজার ৯৫৮ জন। ধর্ম মন্ত্রণালয়ের হজ ব্যবস্থাপনা পোর্টাল অনুসারে, এ বছর মক্কা ও মদিনায় মোট ১৭ জন বাংলাদেশি হজযাত্রী মারা গেছেন। চিকিৎসাধীন রয়েছেন ৩২ জন।

গত ২৯ এপ্রিল থেকে ৩১ মে পর্যন্ত বাংলাদেশ বিমানের পাশাপাশি সৌদি এয়ারলাইনস ও ফ্লাইনাসের ২২৪টি ফ্লাইটে এসব হজযাত্রী সৌদি আরবে পৌঁছান। ফিরতি ফ্লাইট শুরু হবে আগামী ১০ জুন থেকে এবং চলবে ১০ জুলাই পর্যন্ত।

বিশ্ব মুসলিমের জন্য ঐক্য ও শান্তির বার্তা

হজ শুধু একটি ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতা নয়, এটি বিশ্ব মুসলিমদের মধ্যে ঐক্য, শৃঙ্খলা ও আত্মশুদ্ধির এক মহান মঞ্চ। আরাফাতের ময়দান থেকে প্রতি বছর ছড়িয়ে পড়ে শান্তির বার্তা। এ মহাসমাবেশে প্রতিফলিত হয় ইসলামি ভ্রাতৃত্ব ও মানবতার মহত্ব।

ইএইচ

Lading . . .