Advertisement

আলোদূষণের শিকার হচ্ছে পাখিরা

প্রথম আলো

প্রকাশ: ২৩ আগস্ট, ২০২৫

কৃত্রিম আলোর কারণে পাখির জীবনের ছন্দ বদলে যাচ্ছেরয়টার্স
কৃত্রিম আলোর কারণে পাখির জীবনের ছন্দ বদলে যাচ্ছেরয়টার্স

আগে সন্ধ্যা হলেই জোনাকি পোকা আর প্যাঁচার ডাকে মানুষের চোখে ঘুম নেমে আসত। কয়েক দশক ধরে দ্রুত নগরায়ণের ফলে শহরের পাশাপাশি গ্রামের মানুষের জীবনেও বেশ পরিবর্তন এসেছে। ফলে গভীর রাত পর্যন্ত জেগে থাকেন অনেকে। মানুষ ঘুমিয়ে পড়লেও সারা রাতই শহরের রাস্তার আলো জ্বলে। বিলবোর্ডের রঙিন ব্যানার ঝিকিমিকি করে। আর এই আলোর কারণে বিপাকে পড়ছে পাখিরা। শহরের কৃত্রিম আলোর সঙ্গে প্রাকৃতিক আলোর পার্থক্যের কারণে পাখির জীবনের ছন্দ বদলে যাচ্ছে। ফলে আলোদূষণের শিকার হচ্ছে পাখিরা।

বিজ্ঞানীদের তথ্যমতে, শহরে আলোর দূষণের কারণে পাখিদের বিশ্রামের সময়ে বিলম্ব ঘটছে। শহরের রাস্তার কাছাকাছি থাকা পাখিরা দূরবর্তী পাখিদের তুলনায় ভিন্ন আচরণ করে। মানুষ বা যানবাহনের উপস্থিতি পাখির কার্যকলাপে পরিবর্তন আনছে। নতুন এক গবেষণায় নিশাচর প্রজাতির পাখির মধ্যে বিপরীত প্যাটার্ন লক্ষ করা গেছে। নিশাচর প্রজাতির পাখিরা উজ্জ্বল আলোর পরিবেশে কম শব্দ করে। ফলে তাদের রাতের কার্যকলাপ সংক্ষিপ্ত হয়ে গেছে। তবে আলোক সংবেদনশীলতা ও দৃষ্টিশক্তির পার্থক্যের কারণে বিভিন্ন প্রজাতির পাখি সমানভাবে প্রতিক্রিয়া দেখায় না।

যুক্তরাষ্ট্রের সাউদার্ন ইলিনয় ইউনিভার্সিটির স্কুল অব ফরেস্ট্রি অ্যান্ড হর্টিকালচারের বিজ্ঞানী ব্রেন্ট পিজ এবং ওকলাহোমা স্টেট ইউনিভার্সিটির জীববিজ্ঞানী নীল গিলবার্ট ১৮ কোটিরও বেশি পাখির কণ্ঠস্বরের তথ্য সংগ্রহ করেছেন। এসব তথ্য পর্যালোচনা করে রাতের কৃত্রিম আলোতে পাখিরা কীভাবে প্রতিক্রিয়া দেখায় তা জানার চেষ্টা করেন তাঁরা। শুধু তা–ই নয়, গবেষণার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের টাচ অব নেচার আউটডোর এডুকেশন সেন্টারে মাইক্রোফোনসহ বার্ডওয়েদার যন্ত্র, জিপিএস ও সেন্সর স্থাপন করা হয়। পাশাপাশি কর্নেল ল্যাব অব অর্নিথোলজি ও কেমনিটজ ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির তৈরি বার্ডনেট নামের একটি পদ্ধতি কাজে লাগিয়ে আশপাশে থাকা কোন পাখি কী করছে, তার তথ্য সংগ্রহ করা হয়।

বিজ্ঞানী পিজ জানিয়েছেন, ‘আমরা এখন পাখি সংরক্ষণের স্বর্ণযুগে প্রবেশ করছি। পুরো কাজে মেশিন লার্নিং ও অন্য সব আগ্রহীদের অংশগ্রহণের মাধ্যমে জানার সুযোগ তৈরি হচ্ছে। বার্ডনেটে ধারণ করা অডিওকে স্পেকট্রোগ্রামে মাধ্যমে বিশ্লেষণ করে প্রতিটি পাখির ডাক আলাদা করা হয়েছে। এরপর মেশিন লার্নিং অ্যালগরিদম ব্যবহার করে ২৪ ঘণ্টা ধরে অডিও রেকর্ডিং বিশ্লেষণ করা হয়। আলোক দূষণ মানুষ ও বন্য প্রাণী উভয়ের জন্যই উদ্বেগের বিষয় হয়ে উঠেছে।’

সূত্র: আর্থ ডট কম

Lading . . .