Advertisement

শিশুশিল্পী থেকে অভিনেত্রী

প্রথম আলো

প্রকাশ: ৭ আগস্ট, ২০২৫

সাদনিমা বিনতে নোমানশিল্পীর সৌজন্যে
সাদনিমা বিনতে নোমানশিল্পীর সৌজন্যে

সাদনিমার বয়স তখন সাত, উত্তরায় থাকেন। বাসার সামনে হাফ স্টপ ডাউনের একটি বিজ্ঞাপনচিত্রের শুটিং চলছিল। শুটিংয়ের ফাঁকে ছোট্ট সাদনিমাকে দেখে হাফ স্টপ ডাউনের এক কর্মী বলেছিলেন, ‘তুমি কাজ করবে নাকি?’ ২০০৭ সালের সেই স্মৃতিতে ফিরে সাদনিমা বললেন, ‘তখনো জানতাম না, টিভিতে কীভাবে কাজ করে, টিভিতে কীভাবে দেখা যায়? পরে উনি আমার সঙ্গে বাসায় এসেছিলেন। মা–বাবার সঙ্গে কথা বলে যান, উনারা রাজি হন।’ দেড় মাসের ব্যবধানে অমিতাভ রেজার একটি বিজ্ঞাপনচিত্রে কাজের সুযোগ পান। এরপর আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি, একের পর এক বিজ্ঞাপনচিত্রে মডেল হিসেবে আবির্ভূত হয়েছেন। ২০১৬ সাল পর্যন্ত টানা কাজ করেছেন, এরপর কয়েক বছরের বিরতি।

রাজউক উত্তরা মডেল কলেজ থেকে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক। নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি থেকে স্নাতক শেষ করার পর একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি শুরু করেন। চাকরির পাশাপাশি অভিনয় করার পরিকল্পনা করেন। সেই ভাবনা থেকে অভিনয়ে নাম লেখান। তিনি বলেন, ‘অভিনয়ে আসাটা হুট করে। অভিনয়টা মা–বাবার খুবই পছন্দ। ছোটবেলায় তাঁরাই উৎসাহ দিতেন। তখনো অভিনয় নিয়ে আমার কোনো ধারণা ছিল না। চার বছরের গ্যাপ নেওয়ার পর নিজের ইচ্ছায় এসেছি। আমার কাছে মনে হয়েছে, আমি পারব। চেষ্টা চালিয়ে গেলে পারব। বন্ধুবান্ধব, আত্মীয়স্বজন আমাকে উৎসাহ দিয়েছেন।’

এ বছর ভালোবাসা দিবসে মনেরই রঙে রাঙিয়ে নাটকে পার্শ্বচরিত্রে অভিষেক। নাটকটিতে জুঁই চরিত্রে অভিনয় করেন সাদনিমা। নাটকটিতে অভিনয়ের সুবাদে নির্মাতা পার্থ সরকারের নজরে আসেন। এই নির্মাতা পরে সাদনিমাকে নিয়ে তৈরি করেন গোল্ডফিশ। নাটকে ফারিয়া নামে এক সংগ্রামী তরুণীর চরিত্রে নিজেকে মেলে ধরেন সাদনিমা। নাটকটির সুবাদে প্রধান অভিনেত্রী হিসেবে সুযোগ মেলে। মাস দুয়েক আগে নাটকটি বাংলাভিশনে প্রচারিত হয়েছে। সাদনিমা বিনতে নোমান বলেন, হুট করেই গোল্ডফিশ নাটকে অভিনয়ের প্রস্তাব পেয়েছেন তিনি। কাজটা করে খুব ভালো লেগেছে।

অভিষেকের পর পাঁচটির মতো নাটকে কাজ করেছেন। এর মধ্যে গোল্ডফিশ ছাড়াও আগলে রেখো আমায় নামে আরেকটি নাটক মুক্তি পেয়েছে। বাকি নাটকগুলো মুক্তির অপেক্ষায় রয়েছে। আগলে রেখো আমায় নাটকে তাঁকে একজন ট্রাভেল ভ্লগার হিসেবে দেখা গেছে। যিনি রংপুরে ট্রাভেল ভ্লগিং করতে গিয়ে এক রহস্যময় রেস্তোরাঁমালিকের সাক্ষাৎ পান। পাঁচ নাটকেই তাঁর সহশিল্পী খায়রুল বাসার। সাদনিমা বলেন, ‘তাঁর সঙ্গে কাজের অভিজ্ঞতা খুবই ভালো। উনি ভীষণ আন্তরিক ও বিনয়ী। তাঁর আচার–ব্যবহার আমাকে মুগ্ধ করেছে। শুটিংয়ের সেটে উনার কাছ থেকে অনেক কিছু শিখেছি।’

অ্যামাজন প্রাইম ও নেটফ্লিক্সে নিয়মিত সিনেমা–সিরিজ দেখেন সাদনিমা। তাঁর ভাষ্য, মূলত এখনকার জেনারেশনের যাঁরা আছেন, তাঁরা নেটফ্লিক্স, অ্যামাজন প্রাইমের মধ্যে থাকেন। ওখানকার জিনিসই বেশি দেখা হয়। থ্রিল-সাসপেন্স বেশি দেখা হয়। এখন বাংলা নাটক ও সিনেমা দেখা শুরু করেছি, যেহেতু কাজ করছি। সামনে কাজ করারও ইচ্ছা আছে।’

এখন রোমান্টিক, রোমান্টিক–কমেডি ঘরানার কাজই করছেন বেশি। ভবিষ্যতে সুযোগ পেলে থ্রিল-সাসপেন্স ঘরানার কাজ করার ইচ্ছা আছে। বাংলা সিনেমা করারও ইচ্ছা আছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘ভালো গল্প পেলে সিনেমায়ও কাজ করার ইচ্ছা আছে। তবে তার আগে নিজেকে আরও শাণিত করতে চাই। সামনে আরও বড় ধরনের সুযোগ পেলে অবশ্যই কাজ করব।’

অভিনয়ে জয়া আহসানকে আদর্শ মানেন সাদনিমা। তিনি বলেন, ‘ছোটবেলা থেকে তাঁকে দেখে বড় হয়েছি। তিনিই আমার আইডল। উনার অভিনয় খুবই ভালো লাগে, উনার অ্যাপিয়ারেন্স খুবই ভালো লাগে। উনি নিজেকে প্রতিটি চরিত্রের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে পারেন। মুগ্ধ হয়ে পর্দায় তাঁকে দেখি।’

সাদনিমার জন্ম চট্টগ্রামে। তবে অল্প বয়সে পরিবারের সঙ্গে ঢাকায় চলে আসেন। শৈশব থেকেই উত্তরায় থাকেন।

Lading . . .