প্রকাশ: ২৩ আগস্ট, ২০২৫

রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা বা লিপিড প্রোফাইল করে দেখা এখন একটি রুটিন স্বাস্থ্য পরীক্ষা হয়ে গেছে। লিপিড প্রোফাইলে দেহে থাকা কয়েক ধরনের কোলেস্টেরলের পরিমাণ দেখা হয়। এর মধ্যে একটি এইচডিএল।
এইচডিএল মূলত রক্তের ভালো বা উপকারী একটি কোলেস্টেরল, যা বেশি থাকা বাঞ্ছনীয়। রক্তে কোলেস্টেরল বেশি থাকা দুশ্চিন্তার। এইচডিএল এ ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম। এটি বরং কমে গেলে তা চিন্তার বিষয়। এইচডিএল কীভাবে বাড়ানো যায় ও কী করলে কমে, সে সম্পর্কে ধারণা নেওয়া যাক।
এইচডিএল কেন ভালো
এইচডিএল মানে হাই ডেনসিটি লিপোপ্রোটিন। সহজ ভাষায় এটাকে বলা হয় ‘ভালো কোলেস্টেরল’। এটি রক্তের অতিরিক্ত কোলেস্টেরল যকৃতে (লিভার) নিয়ে যায়। সেখানে যাওয়ার পর তা ভেঙে যায়, অথবা পরে শরীর থেকে তা বেরিয়ে যায়।
রক্তে এইচডিএল কোলেস্টেরলের স্বাভাবিক মাত্রা পুরুষ ও নারীর মধ্যে ভিন্ন হয়। নারীর এইচডিএল তুলনামূলক বেশি থাকে। এটা হয় ইস্ট্রোজেন হরমোনের কারণে। নারীদের ক্ষেত্রে ৫০ মিলিগ্রাম/ডেসিলিটার বা এরও বেশি হচ্ছে স্বাভাবিক। পুরুষদের ক্ষেত্রে ৪০ মিলিগ্রাম/ডেসিলিটার।
রক্তে ক্ষতিকর কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে এইচডিএল অত্যাবশ্যক। এটি হৃদ্রোগের ঝুঁকি কমায়। এ ছাড়া ডায়াবেটিস, স্ট্রোক ও মেটাবলিক সিনড্রোমের ঝুঁকিও কমাতে সহায়ক। এটি একটি অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে। শরীরের ওপর স্ট্রেসজনিত পরিবর্তন প্রতিরোধ করে।
যেসব খাবারে এইচডিএল বাড়ে
এইচডিএল প্রাকৃতিকভাবে বাড়ানো যায়। নিয়মিত ব্যায়াম ও হাঁটাহাঁটি করা জরুরি। বিশেষত অ্যারোবিক ব্যায়াম এ ক্ষেত্রে কার্যকর ভূমিকা রাখে। এ জন্য ধূমপান বন্ধ ও ওজন কমানোর চেষ্টা করতে হবে। আর খাদ্যতালিকায় কিছু স্বাস্থ্যকর চর্বি যোগ করতে হবে। অনেক সময় প্রাকৃতিক পদ্ধতির পাশাপাশি চিকিৎসক কারও কারও ক্ষেত্রে সাপ্লিমেন্টও দিয়ে থাকেন। ক্ষতিকর কোলেস্টেরল কমানোর কিছু ওষুধও এইচডিএল বাড়াতে সহায়ক। তবে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শে সাপ্লিমেন্ট বা ওষুধ নিতে হবে।
মাছের তেলে প্রচুর পরিমাণে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড থাকে, যা রক্তের এইচডিএল বাড়াতে সাহায্য করে। কমলা, আপেল, আঙুর—এসব ফলে এইচডিএল থাকে। ওটস, বার্লি, ব্রাউন রাইসও খাদ্যতালিকায় রাখা যায়। ‘এক্সট্রা ভার্জিন অলিভ অয়েল’ ব্যবহার করা যায়।
অনেকে এইচডিএল বাড়ানোর আশায় দিনের পর দিন প্রয়োজন ছাড়াই ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড সাপ্লিমেন্ট খেয়ে যান। চিকিৎসকের পরামর্শ ও প্রয়োজন ছাড়া এভাবে সাপ্লিমেন্ট খাওয়া ঠিক নয়।
ডা. সাইফ হোসেন খান , মেডিসিন কনসালট্যান্ট, পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টার, ধানমন্ডি, ঢাকা