Advertisement

মায়ের কোন কথাটা অক্ষরে অক্ষরে মানেন রাশা

প্রথম আলো

প্রকাশ: ১১ আগস্ট, ২০২৫

রাশা থাডানিছবি : শিল্পীর ইনস্টাগ্রাম
রাশা থাডানিছবি : শিল্পীর ইনস্টাগ্রাম

‘আজাদ’ দিয়ে শুরু হয়েছে রাশা থাডানির বলিউডযাত্রা। সিনেমাটি বক্স অফিসে সাড়া ফেলতে না পারলেও নজর কেড়েছেন রাভিনা ট্যান্ডন–কন্যা। অনন্য স্টাইল, আত্মবিশ্বাসী উপস্থিতি আর নাচের দক্ষতায় জয় করেছেন দর্শকের মন। বলিউডের ‘ড্যান্স কুইন’ মাধুরী দীক্ষিতও তাঁর নাচে মুগ্ধ।

অভিনয়ের পাশাপাশি নিজের জীবনধারা নিয়েও স্পষ্ট অবস্থান রাখেন রাশা। সম্প্রতি ভারতীয় গণমাধ্যম অমর উজালাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এই তরুণ অভিনেত্রী বলেন, তাঁর প্রজন্ম জেন-জি—নিজেদের মতো করে বাঁচতে ভয় পায় না। ‘আমরা নিজের ব্যক্তিত্ব নিয়ে গর্ব করি। নিখুঁত হওয়ার সামাজিক চাপ নিই না, বরং খোলাখুলি মতামত প্রকাশ করি।’

ফ্যাশন–ভাবনায়ও আলাদা রাশা। আরাম আগে, ট্রেন্ড পরে—এটাই তাঁর নীতি। তাঁর ভাষ্যে, ‘যা মানায় আর আরামদায়ক, সেটাই পরি। লোকে কী বলবে, তা নিয়ে ভাবি না, ভাবতে চাইয়ো না।’ এই জীবনদর্শন এসেছে মায়ের কাছ থেকে। ‘আমার বেড়ে ওঠা হয়েছে মায়ের ছায়ায়। আমার ৯০ শতাংশ স্টাইল তাঁর কাছ থেকেই এসেছে।’

বুঝতে বাকি নেই, নব্বইয়ের দশকের ফ্যাশন ও নারীর আত্মবিশ্বাসই রাশার অনুপ্রেরণা। ‘সেই সময়ের পোশাক, সাজগোজ—সবই ছিল আইকনিক। যতটা সম্ভব সেই শৈলী নিজের মধ্যে ধারণ করতে চাই।’ সিনেমায় অভিষেকের আগেই ইনস্টাগ্রামে জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন তিনি—অনুসারীর সংখ্যা সে সময়েও ছিল ১৩ লাখের বেশি।
শুধু অভিনয় নয়, নানামুখী প্রতিভার অধিকারী রাশা। গান গাওয়া, বিভিন্ন বাদ্যযন্ত্র বাজানো—নানা কলায় সাবলীল। মার্শাল আর্টে দক্ষ, তাইকোয়ান্দোতে ব্ল্যাক বেল্টধারী। পড়াশোনাতেও সমান মনোযোগী এই তরুণ তারকা বর্তমানে বিজনেস ম্যানেজমেন্টের প্রথম বর্ষের ছাত্রী।

সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে তাঁর অভিনীত ‘উই আম্মা’ গানের ভিডিও। যদিও ‘আজাদ’ প্রত্যাশিত ব্যবসা করেনি, কিন্তু গানটির জনপ্রিয়তা ক্রমেই বাড়ছে। ভিডিওতে তাঁর উপস্থিতি দর্শকের কাছে বিশেষভাবে প্রশংসিত হয়েছে। ‘গানের শুটিং চলাকালীনও পড়াশোনা করতাম। শুটিং শেষের পরদিনই একটি গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষায় বসেছিলাম,’ জানালেন রাশা। এর আগে মায়ের ‘টিপ টিপ বরসা পানি’ গানের সঙ্গে পারফর্ম করে নজর কাড়েন তিনি। তাঁর নাচে মুগ্ধ মাধুরী দীক্ষিত এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ‘নতুনদের মধ্যে রাশার নাচ আমার ভালো লাগে। ওর নাচে একই সঙ্গে পরিমিত এবং আভিজাত্য আছে।’ এরপরই প্রশ্ন করা হয়, ‘এক, দুই, তিন’ গানের নতুন সংস্করণ হলে কাকে দেখতে চান? প্রশ্ন শেষ না হতেই রাশার নাম বলেন মাধুরী।

অনেকে বলেন, রাশাকে দেখলে নব্বইয়ের রাভিনার কথাই মনে পড়ে। মায়ের মতো আত্মবিশ্বাসী, পরিশ্রমী ও দৃঢ়চেতা রাশা বলিউডে নিজের অবস্থান পাকাপোক্ত করতে চান। নতুন প্রজন্মের প্রতিনিধি হিসেবে তাঁর বিশ্বাস, ‘ভয় করলে কেউ এগোতে পারে না। নিজের মতো বাঁচার স্বাধীনতা মানুষকে শক্তিশালী করে।’ কথা প্রসঙ্গে জানালেন, ছোট থেকেই তাঁকে নিজের মতো বড় করে তুলেছেন মা। বিশেষ করে সব সময় মাটিতে পা রেখে চলতে শিখিয়েছেন। ‘যতই সাফল্য আসুক না কেন, মা আমাকে মাটিতে পা রেখেই চলার পরামর্শ দিয়েছেন। আর বলেছেন, “যদি কোনো দিন দেখি তুমি বাড়াবাড়ি করছ, তা হলে আমি তোমাকে চড় মারব। যদি দেখি তুমি আকাশে উড়ছ, তা হলে আমি গিয়ে তোমাকে পৃথিবীতে ফিরিয়ে আনব।” মায়ের এই কথা আমি অক্ষরে অক্ষরে মানি।’

অভিনয়, ফ্যাশন ও জীবনধারায় নিজের স্বতন্ত্র ছাপ রেখে যাচ্ছেন রাশা। নব্বইয়ের স্টাইল, ফ্যাশন ট্রেন্ড আর মায়ের কাছ থেকে পাওয়া রুচি তাঁকে দিয়েছে আলাদা পরিচিতি। সমালোচকদের মতে, সাফল্যের পাশাপাশি পড়াশোনায় মনোযোগী এই তরুণ অভিনেত্রী আজকের প্রজন্মের কাছে হয়ে উঠতে পারেন অনুপ্রেরণা।

Lading . . .