বর্ষায় দেয়ালকে স্যাঁতসেঁতে ভাব থেকে যেভাবে বাঁচাবেন
প্রকাশ: ৩০ জুন, ২০২৫

ঘরবাড়ি বা অফিসের নির্মাণকাজ যত গুরুত্ব দিয়েই করা হোক না কেন, বছর ঘুরে এলেই এসবে লাগে বিশেষ যত্ন৷ আমাদের দেশে বর্ষাকালেই সাধারণত বাড়ি-অফিসের ভবনগুলোতে নানামুখী সমস্যা দেখা দেয় বেশি। তার মধ্যে দেয়ালে স্যাঁতসেঁতে ভাব অন্যতম। শুধু স্যাঁতসেঁতে ভাবই নয়, ড্যাম্প দেয়ালকে সুরক্ষা দিতে দরকার বাড়তি যত্ন।
নানা কারণে দেয়াল ড্যাম্প হতে পারে। তবে আমাদের দেশে মোটামুটি যে কারণগুলো বেশি দেখা যায় তার মধ্যে আছে—
অতিরিক্ত বৃষ্টি: টানা বৃষ্টি হলে পানি দেয়ালের ফাঁকফোকর দিয়ে চুইয়ে ছাদ বা জানালার পাশ দিয়ে ভেতরে ঢুকে যায়। বিশেষ করে যদি ছাদ বা দেয়ালের প্লাস্টার বা রং পুরোনো হয়ে যায়। দেয়ালে ফাটল থাকলে পানি ঢুকে সহজেই দেয়াল ভিজে যায়।
অতিরিক্ত আর্দ্রতা: বর্ষাকালে বাতাসে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ ও আর্দ্রতা থাকে অনেক বেশি। এই আর্দ্রতা দেয়ালে ঘনীভূত হয়ে ড্যাম্প বা স্যাঁতসেঁতে ভাব তৈরি করে।
ভূগর্ভস্থ পানি উঠে আসা: বাড়ির ভিতে বা মাটির কাছাকাছি অংশে পানির স্তর বেড়ে গেলে সেই পানি নিচ থেকে দেয়ালের ভেতর দিয়ে ওপরে উঠে আসে। বর্ষাকালে এটি বেশি হয়।
অপর্যাপ্ত বায়ু চলাচল: ঘর বদ্ধ হলে বা আলো-বাতাসের চলাচল কম থাকলে আর্দ্রতা দেয়ালে জমে স্যাঁতসেঁতে ভাব তৈরি করে।
স্যানিটারি বা ড্রেনেজ পাইপে ফাটল: বৃষ্টি ছাড়াও পয়োনিষ্কাশনব্যবস্থা, বাথরুম, রান্নাঘর বা পানির ট্যাংকের টাইলস বা পাইপে ছিদ্র দেয়ালে ড্যাম্প তৈরির একটি অন্যতম কারণ।
ঘরের দেয়ালে স্যাঁতসেঁতে ভাব দীর্ঘস্থায়ী হলে দেয়াল ফুলে যায়। যে কারণে দেয়ালের রং নষ্ট হয়। দেয়ালে দীর্ঘদিনের ড্যাম্পের সমস্যায় ঘরে মোল্ড বা ফাঙ্গাসও বাসা বাঁধে। ঘরের কর্নার, ছাদের সিলিং ও দরজা-জানালার আশপাশের জায়গাগুলোতে কালো ছোপ ছোপ দাগ দেখা যায়; দুর্গন্ধও হয়। এসব স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। তাই বাড়ি বা অফিসের বিভিন্ন জায়গায় অবস্থা বুঝে প্রতিরোধের ব্যবস্থা নিতে হয়।
ওয়াশরুম: যেকোনো মৌসুম হোক না কেন, বাড়ির অন্যান্য জায়গার চেয়ে ওয়াশরুমে আর্দ্রতা সবচেয়ে বেশি থাকে। তাই ওয়াটারপ্রুফিং–ব্যবস্থা ভালো না থাকলে এখান থেকেই শুরু হতে পারে ফাঙ্গাসের বিস্তার। ওয়াশরুমে ওয়াটার কোটিং তাই খুব জরুরি। দেয়াল বা ফ্লোর সব জায়গায় ওয়াটারপ্রুফ গ্যাপ ফিলার বা সলিউশন পানির বিন্দু বিন্দু লিকেজ থেকে বাঁচায়।
ছাদ এবং পানির ট্যাংক: কড়া রোদ হোক আর মুষলধারে বৃষ্টি, বাইরের ঝড়-ঝাপটা, আবহাওয়ার বৈরীভাব, ট্যাংক থেকে পানি পড়া, ফাটল—সব ছাদের ওপর দিয়েই যায়। বছরের পর বছর চলতে থাকা এই বৈরিতা ছাদের কার্নিশ আর কোণাগুলোকে দুর্বল করার জন্য দায়ী। ছাদে পানি প্রতিরোধী সুরক্ষা না থাকলে প্রতিনিয়ত পানির লিকেজ বেডরুম থেকে শুরু করে পুরো বিল্ডিংয়ের ফাউন্ডেশনকেই দুর্বল করে ফেলে। এ জন্য ওয়াটারপ্রুফ পলিমার বা সিমেন্ট ভালো করে ফাটলের লাইনে দিতে হবে।
অন্দর: ওয়াশরুম বা ছাদে ওয়াটারপ্রুফ ব্যবস্থা নেওয়া হলেও অন্দরের দিকে তেমন একটা খেয়াল করা হয় না। ইন্টেরিয়র লিকেজ শুরু মানে পুরো ঘরের সৌন্দর্য নষ্ট। সাধারণত বাথরুমের পাশের দেয়ালগুলো অন্দরের দেয়ালে ড্যামেজ তৈরি করে। ড্যাম্প দেয়ালের কারণে ঘরে বাজে গন্ধ হতে পারে, আসবাব নষ্ট হওয়ার জন্যও অনেক সময় দায়ী থাকে ড্যাম্প দেয়াল। তাই অন্দরে রং করার সময় রংটা ওয়াটারপ্রুফ কি না, খেয়াল রাখা উচিত।
পাঁচ দশকের বেশি সময় ধরে গ্রাহকের এমন নানা সমস্যা সমাধানে কাজ করে যাচ্ছে বার্জার পেইন্টস। দেয়ালের সুরক্ষায় গ্রাহককে সেরা সমাধান দেওয়ার জন্য নানা রকম রঙের উদ্ভাবন করেছে তারা। ভবনের ড্যাম্প থেকে সুরক্ষায় বার্জার এবার নিয়ে এল ‘বার্জার মিস্টার এক্সপার্ট ড্যাম্পগার্ড’ সিরিজ। এই সিরিজে প্রতিটি পণ্যই অত্যাধুনিক ও বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে তৈরি।
আজকাল আবহাওয়া পরিবর্তনের সঙ্গে অতিরিক্ত গরম, অল্প বৃষ্টিতেই ড্যাম্পের সমস্যা খুব বেশিই হচ্ছে। তাই ভবনের ভেতর ও বাইরের জন্য ওয়াটারপ্রুফিং কোট, কুলিং কোট বেশ দরকারি। আবাসিক বা ব্যবসায়িক ভবনের নির্মাণকাজ ভেদে ছাদ, দেয়াল ও ঘরে ওয়াটারপ্রুফিংয়ের কাজে অনেক পার্থক্য আছে। বার্জার পেইন্টস এসব পার্থক্য নিয়ে গবেষণা করে উত্তরণের বহুমুখী উপায় বের করেছে।
বার্জার পেইন্টসের ব্র্যান্ড স্পেশালিস্ট ওয়াসেকা ফায়রুজ বলেন, ‘আমরা গ্রাহকের সুবিধার জন্য বিভিন্ন দামের মোট সাত ধরনের পণ্য এনেছি। বাড়ি বা অফিস ভবনের কার্যকারিতা বুঝে যা ব্যবহার করা যাবে। এর মধ্যে বার্জার ড্যাম্পগার্ড প্রাইমার সাধারণ সিলারের চেয়ে ৮ গুণ ও বার্জার ড্যাম্পশিল্ড ৬ গুণ বেশি কার্যকর। বাসা বা অফিসের ড্যাম্প প্রতিরোধের কাজটি আমাদের টিম করে।’
বার্জার ওয়াটারপ্রুফিং টিম কীভাবে কাজ করে, তা–ও জানালেন ওয়াসেকা ফায়রুজ। শুরুতে বার্জারের প্রশিক্ষিত কর্মী গ্রাহকের বাড়ি বা অফিসে পরিদর্শন করেন। তাঁরা কোন ঘরে কত আর্দ্রতা, মেপে হিসাব–নিকাশ করেন। এ ক্ষেত্রে ভবনের অবস্থান, স্থায়িত্ব ও ড্যাম্প হওয়ার যথার্থ কারণ বের করা হয়। তারপর কোন পণ্য কোন জায়গার ড্যাম্পের জন্য ভালো কাজ করবে, সেটা ঠিক করে সেভাবে কাজ করে। টাইলিংয়ের সমস্যার সমাধানও আছে তাঁদের কাছে। তাঁদের কাজ এবং পণ্যের সঙ্গে ওয়ারেন্টি সেবাও মেলে।