‘গান এখন শোনার চেয়ে দেখার বিষয়’ ফাহমিদা নবীর আক্ষেপ
প্রকাশ: ১৫ জুলাই, ২০২৫

সংগীতশিল্পী ফাহমিদা নবী। দীর্ঘ ক্যারিয়ারে নিজস্ব গায়কী দিয়ে তৈরি করেছেন আলাদা ভক্তশ্রেণি। পেয়েছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার। এখনো নিয়মিত প্রকাশ করছেন নতুন গান। তবে বর্তমান ইন্ডাস্ট্রি নিয়ে রয়েছে তার আক্ষেপ। প্রায় সময় ফেসবুকে গানের বর্তমান অবস্থা নিয়ে দুঃখ প্রকাশও করতে দেখা যায় এ শিল্পীকে। এসব বিষয় নিয়ে ও বর্তমান কাজ প্রসঙ্গে যুগান্তরের আজকের ‘হ্যালো...’ বিভাগে কথা বলেছেন তিনি।
যুগান্তর: বর্তমানে কী নিয়ে ব্যস্ত আছেন?
ফাহমিদা নবী: গান নিয়েই ব্যস্ত আছি। কিছুদিন আগেই দুটি গান প্রকাশ করেছি। ‘বন্ধু হারিয়ে গেল’ শিরোনামে একটি গান বিশ্ব সংগীত দিবসে প্রকাশ হয়। এটি প্রকাশের পর বেশ প্রশংসা পাচ্ছি। অস্থির সময়ের মধ্যেও যে মানুষ গান শুনছে, এটি বড় পাওয়া। এ ছাড়া ‘তুমিহীন’ শিরোনামে আরও একটি গান আমার ইউটিউব চ্যানেল থেকেই প্রকাশ করেছি। এটিও সবাই পছন্দ করছেন। এ ছাড়া নতুন কিছু গান করার প্রস্তুতি নিচ্ছি।
যুগান্তর: কিছুদিন আগে ইন্ডাস্ট্রি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন। কী হয়েছিল?
ফাহমিদা নবী: এ আর নতুন কি। এসব দেখার যেন কেউ নেই। নিজের কষ্টের কথা, খারাপ লাগা এখন ফেসবুকেই লিখি। এমন একটা সময় আমরা এসে পৌঁছেছি, সবাই এখন শিল্পী। গান গাইতে এখন আর সাধনার প্রয়োজন হয় না। তাই যে যেভাবে পারছে গাইছে, সেটি আনুষ্ঠানিকভাবে আবার প্রকাশও করছে। এখন গান শোনার চেয়ে দেখার বিষয় হয়ে গেছে। যদিও এটি বুঝতে আমাদের দেরি হয়েছে। এখন গানের কথা, সুর নিয়ে শিল্পীরা চিন্তা করেন না। তারা গুরুত্ব দেন ভিডিওর বিষয়টিতে। তাতে করে মূল গানটাই আসলে হচ্ছে না। ইন্ডাস্ট্রি এমন একটা অবস্থানে রয়েছে এখন, বাধ্য হয়েই আমাদের এ বিষয়গুলো মানতে হচ্ছে।
সব সময় জেনে এসেছি, গান ভালোভাবে গাইতে হবে আর সেটির জন্য প্রয়োজন সাধনা। কোনো কিছু না জেনে, না শিখে সংগীতে সাহস দেখানো উচিত নয়। কিন্তু এখন তো এসব কেউ মানছে না। অনেকেই আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে বেসুরো গান গাইছে। এসব কারণে সংগীতাঙ্গনে একটা বিশৃঙ্খল পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। অবশ্য, এটি অনেক আগে থেকেই শুরু হয়েছে। বর্তমানে এটি ভাইরাসের মতো ছড়িয়ে পড়েছে।
যুগান্তর: এর থেকে উত্তরণের উপায় কী?
ফাহমিদা নবী: একতাই শক্তি। সব সমস্যা সমাধানের পূর্ব শর্ত হচ্ছে একতা। গানের পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে শিল্পী, গীতিকার, সুরকার থেকে শুরু করে গানের সঙ্গে জড়িত সবাইকে এক হতে হবে। সমস্যাটা শুধু শিল্পীদের নিয়ে তা কিন্তু নয়, এখানে যে গান লিখছে, যে সুর করছে তাদেরও সমস্যা রয়েছে। সমস্যা এখানে অনেক রয়েছে। আর এত সমস্যা এককভাবে কখনো কেউ সমাধান করতে পারবে না।
যুগান্তর: নতুন প্রজন্মের যারা গান নিয়ে চর্চা করছে তাদের সম্ভাবনা নিয়ে কী বলবেন?
ফাহমিদা নবী: ভালো গান গাইতে যে সাধনা প্রয়োজন এটি তারা বুঝে গেছে। তারা শুদ্ধ সংগীত চর্চা করছে। আমাদের প্রজন্মের শিল্পীদের তারা অনুসরণ করে। তাদের মধ্যে ভালো গাইবার তাড়না কাজ করে। তাই তো এখনকার ভাইরাল সমাজের সঙ্গে তারা মিশতে পারছে না। আর এখানেই আমার ভয় লাগে তাদের নিয়ে, চিন্তাও হয় অনেক। জানি না তাদের জন্য সামনে কি অপেক্ষা করছে।
আরও পড়ুন