শখের বশে দু’টি গরু দিয়ে খামারের কার্যক্রম চালু করলেও সময়ের ব্যবধানে এ খামারে এ বছর অন্তত ২৬০টি কোরবানির পশু রয়েছে। আধুনিক ও প্রাকৃতিক খাদ্যের উপর পশু লালন-পালন করায় নির্ভরতা বেড়েছে ক্রেতাদের। অনলাইন ভিত্তিক বিক্রির সুযোগ সুবিধা থাকায় ক্রেতারা সাইড ভিজিট করে পশু ক্রয় করতে পারছেন।
ঢাকার দোহার উপজেলার বানাঘাটা এলাকায় টিসিএল এগ্রো নামে একটি গোখামার ক্রেতাদের চাহিদা মেটাতে সক্ষম হচ্ছে। খামার মালিক আশা করছেন, এ বছর গরু বিক্রি করে ভালো দাম পাবেন।
জানা যায়, ২০১৯ সালের মাত্র দু’টি গরু দিয়ে খামারি হিসেবে নাম লেখান টিসিএল এগ্রোর ব্যবস্থাপনা পরিচালক তানভির আহমেদ সানু। নিজে কনস্ট্রাকশন ব্যবসায় প্রতিষ্ঠিত হলেও এক সময়ে তাদের বাপ-দাদারা পশু পালন করে জীবন জীবিকা নির্বাহ করত বিধায় খামারের প্রতি রয়েছে আলাদা আগ্রহ। উপজেলার বানাঘাটা নিজ বসত বাড়ির পাশে ছয় একর পরিত্যক্ত জমিকে কাজে লাগিয়ে গড়ে তোলেন শখের গো-খামার।
তিনি জানান, আধুনিক বলতে সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা রয়েছে খামারটিতে। স্বাস্থ্যসম্মত প্রাকৃতিক খাবারের পাশাপাশি কোনো ধরনের ক্ষতিকারক মেডিসিন প্রয়োগ করেই সাধারন ক্রেতাদের নির্ভরতা বেড়েছে। ক্রেতাদের চাহিদার কথা মাথায় রেখে এ বছর ২৬০টি কোরবানির গরু রয়েছে খামারটিতে। ইতোমধ্যেই বিক্রিও শুরুও হয়ে গেছে। হাটে নয় বরং খামার থেকে সবগুলো পশু বিক্রি হবে এমনটাই প্রত্যাশা খামারির। ঢাকার বাইরের ক্রেতাদের জন্য নিজস্ব পরিবহনে কোরবানির পশু পৌঁছে দেয়ার ব্যবস্থা রয়েছে এখানে। ঈদুল আযহাকে সামনে রেখে এবারো বিভিন্ন আকৃতির গরুর পাওয়া যাচ্ছে। ২০০ কেজি থেকে ৮০০ কেজির বিভিন্ন জাতের গরু রয়েছে খামারে। অনলাইন ও সরাসরি খামার থেকে কেনার সুযোগ রয়েছে এ খামারটিতে। টিসিএল নামে ওয়েবসাইটে প্রতিটি গরুর বিস্তারিত বর্ণনা দেয়া আছে। সাইট ভিজিট করে ক্রেতারা কোরবানির পশু অর্ডার করতে পারবেন।
খামারের কর্মকর্তা কাজী আশিকুজ্জামান জানান, সার্বক্ষণিক খামার পরিস্কার রাখার জন্য পরিচ্ছন্নকর্মী রয়েছে। একটি আদর্শ খামারের ক্ষেত্রে কোনো রকম ত্রুটি রাখা হয়নি।
টিসিএল এগ্রোর ভেটেনারি চিকিৎসক তাজমিলুর রহমান জানান, প্রথমে উন্নত জাত নির্বাচনের মাধ্যমে বাছাই করা গরু কিনে সারা বছর লালন-পালন করা হয়। এই খামারের গরুকে সারা বছরই সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক খাবার খাওয়ানো হয়। কোনো প্রকার ক্ষতিকারক মেডিসিন ব্যবহার না করেই সারা বছর গরু পালন করা হয়। এখান থেকে কোরবানির পশুর ক্রয় করলে ক্রেতা কোনো প্রকার হয়রানি বা প্রতারিত হবেন না।
টিসিএল এগ্রোর ব্যবস্থাপনা পরিচালক তানভির আহমেদ সানু জানান, ছোটবেলায় আমরা গোয়ালে গরু দেখে বড় হয়েছি। এখন আমি কনস্ট্রাকশনের ব্যবসার সাথে সম্পৃক্ত। ছোটবেলার অনেক স্মৃতি আমাকে ভাবায়। আর সেই ভাবনার জায়গা থেকেই আমি খামারের প্রতি আগ্রহ তৈরি হয়েছে। বর্তমানে খামারটিতে ২০ জন লোক কর্মরত আছে, ভবিষ্যতে খামারকে আরো সম্প্রসারণ করে আরো বেশি লোকের কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করব। ইনশাআল্লাহ।