বরিশালের উজিরপুরে ঈদুল আজহার প্রস্তুতি নিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন কর্মকাররা। সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত উপজেলার রামের কাঠি কামারপল্লীতে চলছে ধারালো দা, ছুরি, চাপাতি তৈরি ও শান দেয়ার কাজ। কোরবানির ঈদকে কেন্দ্র করে জমজমাট হয়ে উঠেছে কামারপল্লী।
সোমবার (২ জুন) সকালে উপজেলার বিভিন্ন বাজার ও শোলক ইউনিয়নের রামের কাঠি গ্রামে দেখা যায়, চারদিকে হাতুড়ি পেটানোর টুংটাং শব্দ। কেউ ভারী হাতুড়ি দিয়ে পেটাচ্ছেন দগদগে লাল লোহার পাত, আবার কেউ শান দিচ্ছেন ছুরি কিংবা বটি-চাপাতি, কেউ বা আবার কয়লার আগুনে দিচ্ছেন বাতাস।
উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে লোকজন ভিড় করছেন রামের কাঠি। কেউ পুরোনো দা-ছুরি শান দিচ্ছেন, কেউ আবার নতুন কিনছেন। কামারদের মুখে হাসি, কারণ বছরের সবচেয়ে বেশি আয় হয় এই সময়টাতেই।
স্থানীয় কামার জগদীশ (৪০) কর্মকার বলেন, কোরবানির ঈদের আট থেকে দশ দিন আগে থেকেই কাজের চাপ বেড়ে যায়। এখন দিনে প্রায় ২০ থেকে ২৫টা দা বা ছুরি শান দিতে হয়।
দামের বিষয়ে তিনি বলেন, এ বছর দা-ছুরির দাম কিছুটা বেড়েছে। সাধারণ দা বিক্রি হচ্ছে ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা, ছুরি ১০০ থেকে ১৫০ টাকায়, চাপাতি ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা পর্যন্ত।
কোরবানির ঈদের আর কয়েকদিন বাকি। এর আগ পর্যন্ত বিরামহীনভাবে চলবে কামারদের কোরবানির প্রস্তুতির এই আয়োজন।
নরেশ কর্মকার বলেন, গরম, ধোঁয়া, ঘাম সবকিছু সয়ে কাজ করছি। কারণ কোরবানির ঈদের মৌসুমই আমাদের মূল উপার্জনের সময়।
স্থানীয় বাসিন্দা মো: কামাল তালুকদার বলেন, এই সময় কামারপট্টির উপরই নির্ভর করতে হয়। ভালো ধার দিলে কোরবানির কাজও সহজ হয়। ক্রেতারাও সন্তুষ্ট থাকে।
কামাররা জানিয়েছেন, এবার দা, ছুরি ও চাপাতির দাম কিছুটা বেড়েছে লোহা ও কয়লার মূল্য বৃদ্ধির কারণে। তবু ঈদের আনন্দ ভাগ করে নিতে কাজ করে যাচ্ছেন তারা।
উপজেলার ধামুরা বাজারের আরেক ক্রেতা কাওছার হাওলাদার বলেন, ঈদে নামাজ শেষে আমরা নিজেরাই পশু জবাই করি। তাই দা, ছুরি এগুলো কিনতে এসেছি। গত বছরের চেয়ে এবার দাম অনেক বেশি চাচ্ছেন।
উজিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: আলী সুজা বলেন, ‘ঈদু আজহা সুন্দর ও সুষ্ঠুভাবে উদযাপনের লক্ষ্যে আমাদের সকল ধরনের প্রশাসনিক ব্যবস্থা থাকবে।’