ছবি: যুগান্তর

ময়মনসিংহ আইএইচটির ১৫৬ শিক্ষার্থীর ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত

ময়মনসিংহ নগরীর মাসকান্দা এলাকায় ২০২২ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় ময়মনসিংহ ইনস্টিটিউট অব হেলথ টেকনোলজি (আইএইচটি)। প্রতিষ্ঠানটি নির্মাণে স্বাস্থ্য বিভাগের ব্যয় হয়েছিল ৪১ কোটি টাকা। প্রতিষ্ঠানটি প্রতিষ্ঠার পর প্রয়োজনীয় লোকবল নিয়োগ দেওয়া হয়নি। এখানে বর্তমানে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের দুইজন খণ্ডকালীন শিক্ষক সপ্তাহে দুদিন করে ক্লাস নেন। ফলে শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কায় পড়তে হচ্ছে। প্রতিষ্ঠানের যাবতীয় সমস্যা নিরসনে আন্দোলনে নেমেছেন ইনস্টিটিউটের তিনটি ব্যাচের ১৫৬জন শিক্ষার্থী।

জানা গেছে, ২০২৩ সালের ১১ মার্চ ১০৩টি উন্নয়ন প্রকল্পের সঙ্গে ময়মনসিংহ ইনষ্টিটিউট অব হেলথ টেকনোলজি (আইএইচটি) উদ্বোধন করা হয়। প্রতিবছর প্রতিষ্ঠানটিতে ৫২জন শিক্ষার্থী ভর্তি হন।

চার বছর মেয়াদি কোর্স সম্পন্ন করে সেখানকার শিক্ষার্থীদের মেডিকেল টেকনোলজিস্ট হিসেবে চাকরির সুযোগ রয়েছে। সারা দেশে এমন ২৩টি প্রতিষ্ঠান রয়েছে।

২০২২ সালে প্রতিষ্ঠানটি উদ্বোধন করার পর থেকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন ডা. মোহাম্মদ ছাইফুল ইসলাম খান। গত ৪ মার্চ ময়মনসিংহ জেলার সিভিল সার্জন হিসেবে তার পদায়ন হওয়ার পর থেকে প্রশাসনিক দায়িত্বে এখন আর কেউ নেই।

ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের দুইজন খণ্ডকালীন শিক্ষক সপ্তাহে দুইদিন করে ক্লাস নিচ্ছেন। এর বাইরে শিক্ষার্থীরা কোনো ক্লাস করতে পারছেন না। ভবিষ্যৎ নিয়ে অনিশ্চয়তায় রয়েছেন শিক্ষার্থীরা।

প্রতিষ্ঠানটিতে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ক্যাম্পাসে একটি চারতলা একাডেমিক ভবন, পুরুষ ও মহিলা আবাসিক হল, অধ্যক্ষ এবং কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আবাসন রয়েছে। বৈদ্যুতিক বাতিগুলো নষ্ট হয়ে যাওয়ায় সন্ধ্যার পর ক্যাম্পাসে নেমে আসে অন্ধকার। প্রতিটি ভবনের দরজা জানালা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। প্রতিষ্ঠানটিতে বিভাগভিত্তিক কোনো শিক্ষক না থাকায় ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের পাঠদান বন্ধ ছয় মাস ধরে।

শিক্ষার্থীরা জানান, তারা অনেক আশা নিয়ে এখানে ভর্তি হয়েছেন। এখানে নেই কোনো নিরাপত্তা। চার বছর কোর্সের মধ্যে দুই বছর গেছে। যদি ক্লাস না হয়, শিক্ষক না থাকে তাহলে প্রতিষ্ঠান চলবে কি করে। তাদের ভবিষ্যৎ নষ্ট হয়ে যাবে।

এ প্রতিষ্ঠানে ১৫৬জন শিক্ষার্থী রয়েছেন। সংকট নিরসন না করতে পাড়লে শিক্ষার্থীরা ভবিষ্যৎ নিয়ে অনিশ্চিতায় রয়েছেন। তিন চার বছর পর কোর্সের মেয়াদ শেষ হয়ে যাবে। এখনও ছাত্ররা প্রথমবর্ষ শেষ করতে পারে নাই। সেক্ষেত্রে তাদের ভবিষ্যৎ অন্ধকারে রয়েছে বলে তারা মনে করছেন।

প্রতিষ্ঠানটির সাবেক অধ্যক্ষ ও ময়মনসিংহ জেলা সিভিল সার্জন মোহাম্মদ ছাইফুল ইসলাম খান বলেন, ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর অধ্যক্ষ, উপাধ্যক্ষ পদসহ বিভিন্ন পদে ৪৩৫জন জনবল নিয়োগের সুপারিশ পাঠানো হয় সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে।

সেখান থেকে ৩৫ জনের অনুমোদন দিয়ে ফাইল পাঠানো হয় অর্থ মন্ত্রণালয়ে। ফাইলটি অর্থ মন্ত্রণালয় ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে আছে। জনবল নিয়োগ ছাড়া প্রতিষ্ঠানটি কোনোভাবেই সামনে এগিয়ে যেতে পারবে না। তিনি আশা করেন, সরকার তাদের এ অনিশ্চিয়তা থেকে অচিরেই মুক্তি দিবে।