পালমেইরাস এবং ইংলিশ ক্লাব চেলসি

ক্লাব বিশ্বকাপ ফুটবলের কোয়ার্টার ফাইনালে পালমেইরাস ও চেলসি

ক্লাব বিশ্বকাপ ফুটবলের কোয়ার্টার ফাইনালে উঠেছে ব্রাজিলিয়ান ক্লাব পালমেইরাস এবং ইংলিশ ক্লাব চেলসি। শনিবার রাতে শেষ ষোলোর প্রথম ম্যাচে পালমেইরাস ১-০ গোলে হারিয়েছে স্বদেশি ক্লাব বোতাফাগোকে। নক আউটের দ্বিতীয় ম্যাচে চেলসি ৪-১ গোলে হারায় পর্তুগালের ক্লাব বেনফিকাকে। ব্রাজিলিয়ান ক্লাবগুলোর মধ্যে সবার আগে কোয়ার্টার ফাইনালে উঠেছে পালমেইরাস। শনিবার রাতে ফিলাডেলফিয়ার লিংকন ফিন্যান্সিয়াল ফিল্ড স্টেডিয়ামে নকআউট পর্বের এক উত্তেজনাপূর্ণ ম্যাচে স্বদেশী ক্লাব বোতাফোগোকে ১-০ গোলে হারিয়ে টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে দিয়েছে তারা। এবারের ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপে ব্রাজিলের চারটি ক্লাব অংশ নিয়েছিল, যার সবগুলোই নকআউট পর্বে জায়গা করে নেয়। তবে নকআউট ফিক্সচারের কারণে পালমেইরাস ও বোতাফোগোর মুখোমুখি হওয়ার ফলে একটি ব্রাজিলিয়ান ক্লাবকে নিশ্চিতভাবেই বিদায় নিতে হতো। ১২০ মিনিটের এই ম্যারাথন লড়াইয়ে একমাত্র গোলটি আসে ১০০তম মিনিটে, পালমেইরাসের বদলি তারকা পলিনিও-এর পা থেকে। ডান দিক থেকে বল নিয়ে দুই ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে নিচু ও কৌণিক এক শটে বোতাফোগো গোলকিপার জনকে পরাস্ত করে বল জালে জড়ান তিনি। ম্যাচের বাকি সময়ে বোতাফোগো সমতায় ফিরতে মরিয়া চেষ্টা চালালেও সফল হয়নি। ১১৬ মিনিটে পালমেইরাসের গুস্তাভো গোমেজ দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখে মাঠ ছাড়লে পালমেইরাস ১০ জনের দলে পরিণত হয়। তবে সেই চাপ সামলে শেষ পর্যন্ত জয় নিশ্চিত করে পালমেইরাস। প্রায় দুইবছর পর চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী বোতাফোগোর বিপক্ষে এটি তাদের প্রথম জয়। ম্যাচ শেষে পালমেইরাস কোচ আবেল ফেরেইরা বলেন, আমরা অসাধারণ একটি ম্যাচ খেলেছি। পুরো ৯০ মিনিট এবং অতিরিক্ত সময়েও আমরা ভালো খেলেছি। একজন কম নিয়েও দল একসঙ্গে কষ্ট করেছে এবং জয়টা আমাদের প্রাপ্য ছিল। ব্রাজিলের ঘরোয়া ক্লাব প্রতিযোগিতা এবং লাতিন আমেরিকার মহাদেশীয় ক্লাব টুর্নামেন্টে এই দুই দলের লড়াই বেশ জমে ওঠে। ২০২৩ সালে পালমেইরাস ৩-০ গোলে পিছিয়ে থেকেও ৪-৩ গোলে বোতাফোগোকে হারিয়েছিল, যা তাদের ব্রাজিলিয়ান লিগ শিরোপার দৌড় থেকে ছিটকে দেয়। এরপর ২০২৪ কোপা লিবার্তাদোরেস জয়ের পথে বোতাফোগো পালমেইরাসকে টুর্নামেন্ট থেকে বিদায় করে দেয় এবং তারপর থেকে টানা পাঁচ ম্যাচে পালমেইরাসের বিরুদ্ধে অপরাজিত ছিল তারা। ম্যাচের প্রথমার্ধ ছিল বেশ ধীর গতির। পালমেইরাস বলের দখলে আধিপত্য দেখালেও বোতাফোগোর রক্ষণভাগ ভাঙতে পারেনি। বাঁ দিক দিয়ে পালমেইরাসের একমাত্র আশার আলো ছিলেন কিশোর উইঙ্গার এস্তেভাও, যিনি টুর্নামেন্ট শেষে ৬০ মিলিয়ন ইউরোতে চেলসিতে যোগ দেবেন। প্রথমার্ধে একমাত্র অন-টার্গেট শটটি আসে রিচার্ড রিওসের কাছ থেকে, যা বোতাফোগোর গোলরক্ষক জন দারুণভাবে রক্ষা করেন। অন্যদিকে, গ্রুপ পর্বে ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়ন পিএসজিকে হারালেও বোতাফোগো এই ম্যাচে পুরোপুরি ছন্দহীন ছিল। দ্বিতীয়ার্ধে পালমেইরাস আরও আগ্রাসী হয়ে ওঠে। ৫০ মিনিটে পালমেইরাসের এস্তেভাও একটি গোল করলেও অফসাইডের জন্য তা বাতিল হয়। পরে তাকে বদলি করে মাঠে আনা হয় পলিনিওকে, যিনি শেষ পর্যন্ত ম্যাচের ফল নির্ধারণ করেন। আগামী শনিবার বাংলাদেশ সময় সকাল ৭টায় ফিলাডেলফিয়াতেই কোয়ার্টার ফাইনালে চেলসির মুখোমুখি হবে পালমেইরাস। ইন্টারনেট। অপর ম্যাচে রীতিমতো সিনেমার চিত্রনাট্য হয়ে উঠেছিল চেলসি ও বেনফিকার মধ্যকার ক্লাব বিশ্বকাপের শেষ ষোলোর লড়াই। চার ঘণ্টার টানটান উত্তেজনার ম্যাচে অবশেষে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে ইংলিশ ক্লাব চেলসি। যারা ৪-১ ব্যবধানে হারিয়ে দিয়েছে পর্তুগিজ ক্লাব বেনফিকাকে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শার্লটে যখন দুই দল মাঠে নামে, তখন কেউ ভাবেনি একসময় গ্যালারি খালি করে দিতে হবে। ৬৪ মিনিটে রিস জেমসের অসাধারণ ফ্রি-কিকে চেলসি এগিয়ে গেলে মনে হচ্ছিল ম্যাচের ভাগ্য লেখা হয়ে গেছে। কিন্তু খেলার ৮৬ মিনিটে হঠাৎ শুরু হয় তীব্র ঝড়-বৃষ্টি। খেলা বন্ধ করে দেওয়া হয় নিরাপত্তার কারণে। দর্শকদের সরিয়ে নেওয়া হয় স্ট্যান্ড থেকে। দীর্ঘ দুই ঘণ্টার বিরতি শেষে আবার শুরু হয় খেলা। দীর্ঘ অপেক্ষার পর মাঠে ফিরে খেলা শুরু হতেই চেলসির জন্য আসে ধাক্কা। যোগ করা সময়ে মালো গুস্তোর হাতে বল লাগলে বেনফিকাকে পেনাল্টি দেন রেফারি। স্পটকিক থেকে গোল করেন আর্জেন্টিনার অভিজ্ঞ তারকা অ্যাঞ্জেল ডি মারিয়া। সমতায় ফেরে বেনফিকা। তবে অতিরিক্ত সময়েই বদলে যায় চিত্র। বেনফিকার খেলোয়াড় জিয়ানলুকা প্রেস্টিয়ান্নি দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন। তাতে দশজনের দলে পরিণত হয় বেনফিকা। এই সুযোগকে কাজে লাগাতে দেরি করেনি চেলসি। এনকুনকু, পেদ্রো নেতো ও কিয়েরনান ডিউসবারি-হল একে একে তিনটি গোল করে নিশ্চিত করেন ব্লুজদের জয়। এই দাপুটে জয়ে কোয়ার্টার ফাইনালের টিকিট নিশ্চিত করেছে চেলসি। তাদের প্রতিপক্ষ এবার ব্রাজিলের ক্লাব পালমেইরাস। যারা আগেই শেষ আটে উঠেছে। ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হবে ফিলাডেলফিয়ায়, স্থানীয় সময় শুক্রবার রাত ৮টায় (বাংলাদেশ সময় শনিবার রাত ১টা)। তবে এই ম্যাচে চেলসির গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড় ময়েসেস কাইসেদো হলুদ কার্ডজনিত নিষেধাজ্ঞার কারণে খেলতে পারবেন না। ইন্টারনেট।