এই সময়: ভারতীয় ফুটবলের এক নম্বর লিগ—ইন্ডিয়ান সুপার লিগ ঘিরে গভীর সঙ্কট। আইএসএলের পাশাপাশি চলতি মরশুমে আই লিগ হওয়া নিয়েও সংশয়। এ ব্যাপারে এআইএফএফ প্রেসিডেন্ট কল্যাণ চৌবের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি কোনও প্রতিক্রিয়া দিতে চাননি।
এই সঙ্কট তৈরি হয়েছে, মূলত এআইএফএফের মার্কেটিং পার্টনার তথা আইএসএলের সংগঠক এফএসডিএলের সঙ্গে চুক্তি রিনিউ না হওয়া। চলতি বছরের ৯ ডিসেম্বর শেষ হবে দুই পক্ষের মধ্যে থাকা চুক্তি বা মাস্টার রাইটস এগ্রিমেন্ট (এমআরএ)।
১১ বছর আইএসএল চালানোর পরে ২০২৫-২৬ মরশুমের আইএসএল নির্ধারিত ১৪ সেপ্টেম্বর চালু করতে নারাজ এফএসডিএল। তাদের পক্ষ থেকে আইএসএলে খেলা ক্লাবদের মালিকপক্ষকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, এমআরএ রিনিউ না হওয়া পর্যন্ত তারা লিগের দায়িত্ব নেবে না।
ফলে ক্লাবেরা যেন তাদের টিম গঠনের ব্যাপারে ধীরে চলো নীতি নেয়। এই নির্দেশ আসার পরেই বহু ক্লাব তাদের অপারেশন বন্ধ করে দিয়েছে। এই কাজের দায়িত্বে থাকা কর্মীদেরও একাধিক ক্লাব অনির্দিষ্টকালের জন্য ছুটি দিয়ে বাড়ি ফেরার পরামর্শ দিয়েছে। ৬ ক্লাব এর মধ্যে টিম গড়া বন্ধ করে ডুরান্ড না খেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
কেন চুক্তি রিনিউ হলো না?
১৫ বছর আগে ৭০০ কোটি টাকার বিনিময়ে এফএসডিএল যখন ভারতীয় ফুটবলের মার্কেটিং স্বত্ব কিনেছিল, তখন বলা হয়েছিল চুক্তি শেষের ঠিক ৬ মাস আগে রিনিউ নিয়ে আলোচনায় বসতে হবে।
সেই মতো কল্যাণ চৌবের নেতৃত্বাধীন এআইএফএফ কমিটি নয়া চুক্তির রূপরেখা তৈরি শুরু করে মার্চ মাসে। তৈরি হয় ৮ সদস্যের টাস্ক ফোর্সও। এফএসডিএলের সঙ্গে পরিকল্পনা নিয়ে চারবার মিটিং হয়।
এর মধ্যে ৭ এপ্রিল ফেডারেশনের কর্মসমিতির সভায় কমিটির সদস্য ভাইচুং ভুটিয়া দাবি তোলেন, এই কমিটি যেন এফএসডিএলের সঙ্গে চুক্তি রিনিউয়ের কাজ না করে। সেটা করবে ফেডারেশনের নতুন কমিটি।
ফেডারেশনের নয়া সংবিধান নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে দীর্ঘদিন ধরেই মামলা চলছে। এপ্রিলেই সুপ্রিম কোর্ট সিদ্ধান্ত নেয়, নয়া সংবিধান কার্যকরী হলে ভোট করে নতুন কমিটি গড়তে হবে। আর সেখানেই ওঠে ভাইচুংয়ের দাবি।
সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি তখন প্রাক্তন ভারতীয় ক্যাপ্টেন ভাইচুংয়ের কথাকে মান্যতা দিতেই নির্দেশ দেন, পুরোনো কমিটি চুক্তি রিনিউ নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারবে না। নতুন কমিটি এসে তা করবে। যদি ভাইচুং এই প্রসঙ্গ উত্থাপন না করতেন, তাহলে হয়তো চলতি মাসে ফেডারেশনের সঙ্গে এফএসডিএলের চুক্তি রিনিউ হয়ে যেত।
শুধু আইএসএল নয়, এ বার আই লিগ হওয়াও অনিশ্চিত। কারণ প্রতি বছর মে-জুন মাসে ফেডারেশন সারা মরশুমের বাজেট তৈরি করে। এ বার সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশেই সেই বাজেট মিটিং হয়নি।
ফলে আচমকাই ভারতীয় ফুটবল শিল্পে ঘোর দুর্দিন। শুধু ফুটবলার-কোচেরা না নন, হাজার হাজার কর্মীরও রুটি রোজগারেও টান পড়ার আশঙ্কা।