আমি মাহেরীনকে জিজ্ঞেস করেছিলাম, তুমি তোমার নিজের দুই সন্তানের কথা একবারও ভাবলে না! সে বলেছিল, ওরাও তো আমার সন্তান। ওদের একা রেখে আমি কী করে চলে আসি? অনেক মায়ের সন্তানকে বাঁচিয়ে চলে গেলেন মাহেরীন, ঘরে রইল তার মা-হারা দুই সন্তান। নিহত শিক্ষিকা মাহেরীন চৌধুরীর স্বামী মনসুর হেলাল একবুক কষ্ট নিয়ে এ কথাগুলোই বলছিলেন। ভাই মুনাফ চৌধুরী জানান, ওখানে যারা ছিলেন, তারা আমাদের বলেছেন, মাহেরীন ইচ্ছা করলে বের হতে পারতেন, কিন্তু হননি। উনি বাচ্চাদের আগে বের করার চেষ্টা করেন।
ঘড়ির কাঁটায় যখন সোমবার দুপুর সোয়া ১টা, রাজধানীর উত্তরার দিয়াবাড়ি এলাকায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিকট শব্দ করে আছড়ে পড়ে বিমানবাহিনীর যুদ্ধবিমানটি। মুহূর্তেই প্রতিষ্ঠানটির ‘হায়দার আলী’ ভবন দাউদাউ করে জ্বলে ওঠে। আগুনের লেলিহান শিখা গ্রাস করে নেয় শ্রেণিকক্ষে থাকা ছোট ছোট শিশুদের। তাদের বেশির ভাগই ছিল তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণনা অনুযায়ী, এত ক্ষিপ্র গতিতে বিমানটি আছড়ে পড়ে যে, আশপাশের এলাকাও কেঁপে ওঠে।
সোমবার দুপুরের এ বিভীষিকায় মুহূর্তেই প্রাণ হারায় অনেক শিশু। তাদের সঙ্গে মারা যান তাদেরই প্রিয় শিক্ষিকা মাহেরীন চৌধুরী, যিনি মাইলস্টোনের ওই শাখায় সমন্বয়ক ছিলেন। সেখানে থাকা এবং পরে তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া ব্যক্তিরা বলেন, শিক্ষার্থীদের বাঁচাতে গিয়ে মাহেরীন নিজে বের হতে দেরি করেন।