অসুস্থতার কারণে ফরজ গোসলের পরিবর্তে তায়াম্মুম করা যাবে?

অসুস্থতার কারণে ফরজ গোসলের পরিবর্তে তায়াম্মুম করা যাবে?

কারো ওপর যদি গোসল ফরজ হয় এবং কোনো অসুস্থতার কারণে স্বাভাবিক বা ঠাণ্ডা পানি দিয়ে গোসল করা যদি তার জন্য ক্ষতির কারণ হয়, তাহলে দেখতে হবে, কোনো উপায়ে ক্ষতি ছাড়া তার পক্ষে গোসল করা সম্ভব কি না।

যেমন ঠাণ্ডা পানির কারণে সমস্যা হলে দেখতে হবে পানি গরম করে সে গোসল করতে পারে কি না, আহত বা আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে থাকলে দেখতে হবে আঘাতপ্রাপ্ত জায়গা না ভিজিয়ে ব্যান্ডেজের ওপর মাসাহ করে তার পক্ষে গোসল করা সম্ভব কি না।

যদি কোনো পদ্ধতিতে নিজের ক্ষতি না করে গোসল করা সম্ভব হয়, তাহলে তাকে ওই পদ্ধতিতে গোসল করতে হবে। পানি গরম করার সুযোগ থাকার পরও, আঘাতপ্রাপ্ত জায়গা এড়িয়ে গোসল করার সুযোগ থাকার পরও তায়াম্মুম করলে তা শুদ্ধ হবে না।

যদি নিজের ক্ষতি না করে গোসল করার কোনো রকম সুযোগ না থাকে, গোসল করলে তার মৃত্যু, অঙ্গহানি, অসুস্থ হয়ে পড়া বা অসুখ বেড়ে যাওয়ার সমূহ সম্ভাবনা থাকে, তাহলে তার জন্য গোসলের পরিবর্তে তায়াম্মুম করা জায়েজ।

আল্লাহ তায়ালা বলেন,

وَ اِنۡ کُنۡتُمۡ مَّرۡضٰۤی اَوۡ عَلٰی سَفَرٍ اَوۡ جَآءَ اَحَدٌ مِّنۡکُمۡ مِّنَ الۡغَآئِطِ اَوۡ لٰمَسۡتُمُ النِّسَآءَ فَلَمۡ تَجِدُوۡا مَآءً فَتَیَمَّمُوۡا صَعِیۡدًا طَیِّبًا فَامۡسَحُوۡا بِوُجُوۡهِکُمۡ وَ اَیۡدِیۡکُمۡ مِّنۡهُ مَا یُرِیۡدُ اللّٰهُ لِیَجۡعَلَ عَلَیۡکُمۡ مِّنۡ حَرَجٍ وَّ لٰکِنۡ یُّرِیۡدُ لِیُطَهِّرَکُمۡ وَ لِیُتِمَّ نِعۡمَتَهٗ عَلَیۡکُمۡ لَعَلَّکُمۡ تَشۡکُرُوۡنَ

তোমরা যদি অসুস্থ হও অথবা সফরে থাক, যদি তোমাদের কেউ মলত্যাগ করে আসে অথবা যদি স্ত্রী সহবাস কর তারপর পানি না পাও, তবে পবিত্র মাটি নাও এবং তোমাদের মুখ ও হাত তা দিয়ে মাসেহ কর। আল্লাহ তোমাদের জন্য কোনো সমস্যা সৃষ্টি করতে চান না, বরং তিনি চান তোমাদের পবিত্র করতে এবং তার নেয়ামত তোমাদের ওপর পূর্ণ করতে, যাতে তোমরা কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন কর। (সুরা মায়েদা: ৬)

অজু ও গোসলের পরিবর্তে এক নিয়মেই তায়াম্মুম করতে হয়। তায়াম্মুমের নিয়ম হলো, তায়াম্মুমের নিয়ত করে মাটি বা মাটিজাতীয় বস্তু যেমন বালু, পাথর, চুন ও সুরমা ইত্যাদি কোনো কিছুতে দুবার হাত লাগানো, একবার হাত দিয়ে মুখ মাসাহ করা, আরেকবার কুনুই পর্যন্ত উভয় হাত মাসাহ করা।

তায়াম্মুম অজু-গোসলের বিকল্প এবং অজু গোসল যে সব কারণে ভাঙে, সে সব কারণ যেমন মলমুত্র ত্যাগ ইত্যাদি কারণে তায়াম্মুমও ভাঙে। এ ছাড়া যে কারণে তায়াম্মুম করা হয়েছিল, তা দূর হয়ে গেলেও তায়াম্মুম ভাঙে। উল্লিখিত ক্ষেত্রে শীত কমে গেলে বা পানি গরম করার সুযোগ সৃষ্টি হলে তায়াম্মুম ভেঙে যাবে।