ধনী ব্যক্তি রোজা রেখে কসমের কাফফারা আদায় করতে পারবেন?

ধনী ব্যক্তি রোজা রেখে কসমের কাফফারা আদায় করতে পারবেন?

ইসলামে শপথ শুধু আল্লাহর নামেই করতে হয়। আল্লাহ ছাড়া কারো নামে শপথ করা হারাম ও ছোট শিরক যা বড় গুনাহসমূহের অন্তর্ভুক্ত। আল্লাহর ছাড়া যে কোনো ব্যক্তি বা বস্তু যেমন ফেরেশতা, নবিজি (সা.), কাবা, আমানত, নামাজ, বাবা-মা বা কোনো দরবেশের নামে শপথ করা হারাম। রাসুল (সা.) বলেন, আল্লাহ তোমাদেরকে বাবা-মায়ের নামে শপথ করতে নিষেধ করেছেন। যে শপথ করতে চায়, সে যেন আল্লাহর নামে শপথ করে অথবা চুপ থাকে। (সহিহ বুখারি, সহিহ মুসলিম)

কেউ যদি আল্লাহর নামে কোনো শপথ করে পরে তা রক্ষা করতে ব্যর্থ হয়, শপথটি ভেঙে ফেলে, তাহলে সেজন্য কাফফারা দিতে হয়। কসমের কাফফারা হলো, দাস মুক্ত করা অথবা দশজন দরিদ্র ব্যক্তিকে দুই বেলা পেটপুরে খাবার খাওয়ানো অথবা দশজন দরিদ্র ব্যক্তিকে এক জোড়া করে পোশাক দান করা। এভাবে কাফফারা আদায় করার সামর্থ্য না থাকলে লাগাতার তিন দিন রোজা রাখা।

আল্লাহ তাআলা বলেন,

لَا یُؤَاخِذُکُمُ اللّٰهُ بِاللَّغۡوِ فِیۡۤ اَیۡمَانِکُمۡ وَ لٰکِنۡ یُّؤَاخِذُکُمۡ بِمَا عَقَّدۡتُّمُ الۡاَیۡمَانَ فَکَفَّارَتُهٗۤ اِطۡعَامُ عَشَرَۃِ مَسٰکِیۡنَ مِنۡ اَوۡسَطِ مَا تُطۡعِمُوۡنَ اَهۡلِیۡکُمۡ اَوۡ کِسۡوَتُهُمۡ اَوۡ تَحۡرِیۡرُ رَقَبَۃٍ ؕ فَمَنۡ لَّمۡ یَجِدۡ فَصِیَامُ ثَلٰثَۃِ اَیَّامٍ

আল্লাহ তোমাদেরকে পাকড়াও করেন না অর্থহীন কসমের ব্যাপারে, কিন্তু যে কসম তোমরা দৃঢ়ভাবে কর সে কসমের জন্য তোমাদেরকে পাকড়াও করেন। সুতরাং এর কাফফারা হল দশ জন মিসকীনকে খাবার দান করা, মধ্যম ধরনের খাবার, যা তোমরা নিজেদের পরিবারকে খাইয়ে থাক, অথবা তাদের বস্ত্র দান করা, কিংবা একজন দাস-দাসী মুক্ত করা। যে সামর্থ্য রাখে না, তার জন্য তিন দিন রোজা রাখা। (সুরা মায়েদা: ৮৯)

এ আয়াত থেকে বোঝা যায়, কসমের মূল কাফফারা দাস মুক্ত করা অথবা খাবার বা বস্ত্র দান করা। আর রোজা রাখা শুধু এমন ব্যক্তিদের জন্য কাফফারা হতে পারে, যার খাবার খাওয়ানো বা বস্ত্র দান করার মাধ্যমে কাফফারা আদায় করার সামর্থ্য নেই। তাই যে ধনী বা সম্পদশালী, খাবার খাওয়ানো বা বস্ত্র দান করার মাধ্যমে কাফফারা আদায় করার সামর্থ্য যার আছে, সে রোজা রাখার মাধ্যমে কাফফারা আদায় করতে পারবে না। কাফফারার নিয়তে রোজা রাখলেও তার কাফফারা আদায় হবে না।

সামর্থ্য না থাকা অবস্থায় কেউ যদি কাফফারার নিয়তে রোজা রাখা শুরু করে এবং তিনটি রোজা সম্পন্ন করার আগেই খাবার খাওয়ানো বা বস্ত্র দান করার সমার্থ্য অর্জন করে, তাহলে ওই রোজাগুলো নফল গণ্য হবে এবং রোজার মাধ্যমে তার কাফফারা আদায় হবে না। তাকে খাবার বা বস্ত্র দান করার মাধ্যমে কাফফারা আদায় করতে হবে।