সবার চোখ যদিও সিঙ্গাপুর ম্যাচে, তবে ভুটানকে হারিয়ে বাংলাদেশ পেয়েছে অনুপ্রেরণার উৎস, পেয়েছে আত্মবিশ্বাস। ফিরে পেয়েছে ফুটবল-উন্মাদনাও। যদিও প্রীতি ম্যাচ, তবে জয়টা নতুন শুরুর সাক্ষীও।
হামজা চৌধুরীরা হঠাৎই দেশের ফুটবলের পুরো চিত্র বদলে ফেলেছেন। এতোদিন তা মুখে মুখে থাকলেও গতকাল বুধবার রাতে তা মাঠেও করে দেখিয়েছেন তারা। দারুণ ছন্দ ধরে রেখে ভুটানকে হারিয়েছে ২-০ গোলে।
ম্যাচ শেষে তৃপ্তির ঢেঁকুর তুললেন কোচ হাভিয়ের কাবরেরা। সেইসাথে তার মুখেও ছিল হামজা স্তুতি।
সংবাদ সম্মেলনে এসে তিনি বলেন, ‘হামজার ভীষণ প্রভাব ছিল। বিশেষ করে শুরুর দিকে। হামজার মতো খেলোয়াড়ের মাঠে থাকার প্রভাব অবশ্যই দৃশ্যমান হয়ে ওঠে, এটাই সত্যি।’
তবে আসল প্রশংসাটা এল প্রতিপক্ষের শিবির থেকে। ভুটানের জাপানি কোচ আতসুশি নাকামুরা স্পষ্টই বলেন, ‘হামজাই পার্থক্য গড়ে দিয়েছে। সে এক উঁচুমানের খেলোয়াড়। বল পায়ে বা বল ছাড়া- দুই ভূমিকাতেই সে অনন্য। মাঠে তার উপস্থিতি অন্যরকম। এ ধরনের খেলোয়াড় যেকোনো দলের জন্যই সম্পদ।’
তিনি আরো বলেন, ‘ম্যাচটি আমাদের জন্য কঠিন ছিল। গত বছর থিম্পুতে বাংলাদেশকে দেখেছি লম্বা বল খেলতে, কিন্তু এই বাংলাদেশ পাসিং, বিল্ডআপ ও মাঝমাঠের নিয়ন্ত্রণে অনেক উন্নতি করেছে। আর সেই পরিবর্তনের কেন্দ্রে হামজা।’
এদিকে ভুটানকে হারানোর প্রসঙ্গে কাবরেরা বলেন, ‘এটা প্রত্যাশিত জয়। হামজার সেট পিস থেকে গোল করা আমাদের পরিকল্পনার অংশ ছিল। তার গোল আমাদের পরিকল্পনা সফল করেছে। খেলোয়াড়দের মানসিকতাও ছিল দারুণ ইতিবাচক।’
মাঠ ভর্তি দর্শকের প্রশংসা করতেও ভুলেননি কাবরেরা। প্রশংসা করেন ভুটানের কোচও। তিনি বলেন, ‘আমি সাধারণত জোরে কথা বলি। কিন্তু আজ গ্যালারির আওয়াজে নিজের কথা নিজেই শুনতে পারছিলাম না। এটা স্বাভাবিক, হোম ম্যাচ। তবে দর্শক অসাধারণ ছিল। আমরা হারলেও ভালো ম্যাচ হয়েছে।’
এদিকে হামজার পাশাপাশি এই ম্যাচে অভিষেক হয় ইতালি প্রবাসী ফুটবলার ফাহমিদুল ইসলামের। মাত্র ১৮ বছর বয়সী তরুণ নজর কেড়েছেন কোচের। শুরুর জড়তা কাটিয়ে পুরো মাঠ দাপিয়ে বেড়ান তিনি। যদিও গোলের দেখা পাননি।
কোচ তার প্রসঙ্গে বলেন, ‘সিঙ্গাপুর ম্যাচের আগে আমাদের অনেক কিছু জানা জরুরি। তার মাঝে একটি ফাহমিদুলের সামর্থ্য। শুরুর দুই-তিনটা পাস টানা দেয়ার পর সে জড়তা কাটিয়ে উঠে। আমি মনে করি, সে ভালো খেলেছে।’
সিঙ্গাপুরের বিপক্ষেও ফাহমিদুলের একাদশে থাকার বার্তা দিয়ে রাখলেন কাবরেরা। তিনি বলেন ‘বল পায়ে সে ভীষণ মনোযোগী ছিল। প্রাণশক্তি ছিল দারুণ। সে খুব ভালো করেই জানে, আমরা তাকে নিয়ে অনেক কথা বলছি। সে যা করেছে, সেটা তাকে পরের ম্যাচে গেম টাইম দিতে পারে।’