দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে জিম্বাবুয়ের রেকর্ড হার

দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে জিম্বাবুয়ের রেকর্ড হার

দক্ষিণ আফ্রিকার সফরের প্রথম টেস্ট জিততে নিজেদের টেস্ট ইতিহাসের রেকর্ড রান তাড়া করতে হতো জিম্বাবুয়ের। তবে মঙ্গলবার বুলাওয়ে টেস্টে ৫৩৭ রানের লক্ষ্য ব্যাট করতে নেমে ২০৮ রানেই অলআউট হয় স্বাগতিকরা। নিজেদের ৩৩ বছরের লাল বলের ইতিহাসে রানের হিসেবে এই ৩২৮ রানের হারই সবচেয়ে বড়। বিশাল জয়ে দুই ম্যাচ টেস্ট সিরিজে ১-০তে এগিয়ে গেছে প্রোটিয়ারা।

টেস্টে স্বাগতিকদের আগের সবচেয়ে বড় হারটি ছিল ৩১৫ রানের, ২০০২-এ শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে গল টেস্টে। তিনশ’র বেশি রানে এই দু’টি ম্যাচে হেরেছে জিম্বাবুইয়ানরা। তবে বুলাওয়ে টেস্টে চতুর্থ দিন স্বাগতিক দলের হারের ব্যবধানটা আরও বড় হবার শঙ্কা দেখা দেয়। ১ উইকেটে ৩২ রান নিয়ে দিনের শুরু করা জিম্বাবুয়ে দলীয় ৮২ রানেই ৬ উইকেট হারিয়ে বসে। পরে অধিনায়ক ক্রেইগ আরভিন আর ওয়েলিংটন মাসাকাদজার সপ্তম উইকেটে ৮৩ রানের জুটিতে দ্বিতীয় সেশনে যায় জিম্বাবুয়ে। দ্বিতীয় ইনিংসে স্বাগতিকদের আর কোনো জুটি ফিফটিও ছুঁতে পারেনি। স্রেফ ১ রানের জন্য ব্যক্তিগত ফিফটি থেকে বঞ্চিত হন আরভিন। ব্যক্তিগত ৫৭ রানে নবম উইকেট হিসেবে সাজঘরে ফেরেন মাসাকাদজা। ব্লেসিং মুজারাবানির অপরাজিত ৩২ রান কেবল হারের ব্যবধানটাই কমায়। ক্যারিয়ারের স্রেফ দ্বিতীয় টেস্ট খেলতে নামা দক্ষিণ আফ্রিকার কর্বিন বশ তুলে নেন ফাইফার। এর আগে সফরকারীদের প্রথম ইনিংসে সেঞ্চুরি হাঁকান এই ৩০ বছর বয়সী অলরাউন্ডার। যদিও তার এমন দুর্দান্ত পারফর্মেন্সেও ম্যাচসেরার পুরস্কার উঠেছে দক্ষিণ আফ্রিকার সর্বকনিষ্ঠ লাল বলের সেঞ্চুরিয়ান বনে যাওয়া লুয়ান-ড্রে প্রিটোরিয়াস। প্রথম ইনিংসে ১৫৩ রানের সেই ইনিংসে অনেকগুলো রেকর্ডও গড়েন এই ১৯ বছর বয়সী উইকেটকিপার-ব্যাটার।

ম্যাচসেরার পুরস্কার থেকে বঞ্চিত থাকলেও ৪৩ রানের খরচে ফাইফার নিয়ে বেশ কয়েকটি কীর্তি গড়েছেন বশ। দক্ষিণ আফ্রিকার প্রথম ইনিংসে আটে নেমে সেঞ্চুরি করে অপরাজিত থাকেন এই ডানহাতি ব্যাটার। প্রোটিয়াদের ১৩৬ বছরের টেস্ট ইতিহাসে চতুর্থ ক্রিকেটার হিসেবে একই ম্যাচে সেঞ্চুরি ও ফাইফার তুলে নিয়েছেন বশ। প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে দেশটির হয়ে এই কীর্তি করেন জিমি সিনক্লেয়ার। ১৮৯৯-এ কেপটাউন টেস্টে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম ইনিংসে ৬ উইকেট নেয়ার পর ১০৪ রানের ইনিংসও খেলেন তিনি। লাল বলের ইতিহাসে সেটিই ছিল কোন ম্যাচে প্রথমবার সেঞ্চুরি ও ফাইফারের নজির। দক্ষিণ আফ্রিকার একমাত্র ক্রিকেটার হিসেবে দু’বার এই স্বাদ পান জ্যাক ক্যালিস, ১৯৯৯-এ ওয়েস্ট ইন্ডিজ আর ২০০২-এ বাংলাদেশের বিপক্ষে। তবে দেশের প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে বিদেশের মাটিতে এই কীর্তি গড়লেন বশ। সিনক্লেয়ার আর ক্যালিসসহ ফকনার এই যুগল কীর্তি পান ঘরের মাঠে। এই অর্জনে দক্ষিণ আফ্রিকার দ্রুততম ক্রিকেটারও বশ। প্রোটিয়াদের মধ্যে তার (২) চেয়ে কম ম্যাচে (৫) লেগেছে স্রেফ সিনক্লেয়ারের। ১৪৮ বছরের টেস্ট ইতিহাসে ক্যারিয়ারের অভিষেক ম্যাচেই এই কীর্তি গড়েন স্রেফ নিউজিল্যান্ডের ব্রেন্ডন টেইলর। ১৯৬৫তে ভারতের বিপক্ষে কলকাতার ইডেন গার্ডেন্সে প্রথম ইনিংসে আটে নেমে সেঞ্চুরি করেন টেইলর এবং প্রথম ইনিংসেই তিনি তুলে নেন ফাইফার।