চল্লিশ পেরিয়ে অবশেষে।
আন্তর্জাতিক ফুটবল ক্যারিয়ারে ৪৭টি দেশের বিপক্ষে খেলেছেন ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো। সব দলের বিপক্ষেই জিতেছেন, এমন নয়। কোনো দলের বিপক্ষে একটি বা দুটি ম্যাচ খেলে জয় না পাওয়াটা খুব অস্বাভাবিকও নয়।
তবে জার্মানির ব্যাপারটা ছিল আলাদা। জার্মানদের বিপক্ষে চারটি ম্যাচ খেলেও জয় ছিল না রোনালদোর। এমনকি চারবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের বিপক্ষে আগের পাঁচ ম্যাচে পর্তুগালও জিততে পারেনি।
অবশেষে গতকাল মিউনিখে ‘জার্মান–অভিশাপ’ থেকে মুক্তি মিলেছে রোনালদো ও তাঁর দলের। উয়েফা নেশনস লিগের সেমিফাইনালে জার্মানিকে ২–১ গোলে হারিয়েছে পর্তুগাল। দলের দ্বিতীয় গোলটি রোনালদোই করেছেন।
জার্মানির বিপক্ষে পর্তুগাল সর্বশেষ জিতেছিল ২০০০ সালের ইউরোতে ৩–০ ব্যবধানে। এরপর ২০০৬ বিশ্বকাপ, ২০০৮ ইউরো, ২০১২ ইউরো, ২০১৪ বিশ্বকাপ এবং ২০২০ ইউরোয় জার্মানদের কাছে হেরেছিল পর্তুগিজরা। এ ছাড়া জার্মানির মাটিতে পর্তুগালের সর্বশেষ জয় ছিল সেই ১৯৮৫ সালে।
জার্মানির মাটিতে ৪০ বছর আর সব ভেন্যু মিলিয়ে ২৫ বছর জয়হীন থাকা পর্তুগাল বুধবার রাতের ম্যাচটিতে ৪৮ মিনিটে পিছিয়ে পড়েছিল। জশুয়া কিমিখের পাস থেকে সহজেই গোল করেন ফ্লোরিয়ান ভির্টৎস।
পর্তুগাল ঘুরে দাঁড়ায় কদিন আগে এই মাঠেই পিএসজির হয়ে চ্যাম্পিয়ন লিগের শিরোপা জেতা ভিতিনিয়া বদলি নামার পর। ৫৮ মিনিটে রুবেন নেভেসের পরিবর্তে ভিতিনিয়াকে নামান পর্তুগালের কোচ রবার্তো মার্তিনেজ। ২৫ বছর বয়সী এই মিডফিল্ডার নামার পরেই বদলে যায় পর্তুগালের খেলার ধরন।
৬৩ মিনিটে সমতাসূচক গোল এনে দেন আরেক বদলি ফ্রান্সিসকো কনসেইসাও। এর পাঁচ মিনিট পরই নুনো মেন্দেজের বাড়ানো বল সহজে জার্মানির জালে জড়ান রোনালদো। ফেব্রুয়ারিতে চল্লিশ বছর পূর্ণ করা রোনালদোর এটি ১৩৭তম আন্তর্জাতিক গোল। জার্মানির বিপক্ষে রোনালদোই এখন সবচেয়ে বেশি বয়সী গোলদাতা।
শেষ পর্যন্ত স্কোরলাইন ২–১ ধরে রেখেই মাঠ ছাড়ে পর্তুগাল। জায়গা করে উয়েফা নেশনস লিগের ফাইনালে। তবে শিরোপা নির্ধারণীর মঞ্চে জায়গা করার চেয়েও পর্তুগাল দল বেশি আনন্দিত ‘জার্মান–অভিশাপ’ থেকে মুক্তি মিলেছে বলে। ম্যাচ শেষে কোচ রবার্তো মার্তিনেজ বলেন, ‘আমাদের এই জয়টা উপভোগ করতে হবে, কারণ জার্মানির বিপক্ষে প্রথম জিতলাম।’
আজ রাতে নেশনস লিগের আরেক সেমিফাইনালে মুখোমুখি হবে স্পেন–ফ্রান্স। এই ম্যাচের জয়ী দলের সঙ্গে পর্তুগাল ফাইনাল খেলবে রোববার।