ব্যাটে ঝড় তোলার পর কৃতজ্ঞতা জানিয়ে ‘শেষ’ করলেন রাসেল
গ্যালারির দর্শকদের তুমুল করতালির মধ্যে সিঁড়ি বেয়ে নামলেন আন্দ্রে রাসেল। সামনেই রাখা জ্যামাইকার পতাকায় মোড়ানো স্মারক ব্যাট-বল। সেখানে অপেক্ষমাণ দেশটির ক্রীড়ামন্ত্রী অলিভিয়া গ্রেঞ্জ, দু’পাশে দাঁড়িয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও অস্ট্রেলিয়া দল। জন্মস্থান কিংস্টনের স্যাবাইনা পার্কে আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের শেষ ম্যাচটি খেলার স্বপ্ন পূরণ হয়েছে রাসেলের। মাঠে নেমে উপহার দিয়েছেন এক ঝড়ো ইনিংসও। তবে ক্যারিবিয়ান এই গ্রেটের শেষ মাচটিও জয় দিয়ে রাঙাতে পারল না ওয়েস্ট ইন্ডিজ। পাঁচ ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজের দ্বিতীয়টিতে স্বাগতিকরা হেরে গেছে ৮ উইকেটে। বাংলাদেশ সময় গতকাল সকালের ম্যাচে টসে হেরে আগে ব্যাট করতে নেমে ক্যারিবিয়ানরা তোলে ৮ উইকেটে ১৭২ রান। রান তাড়ায় ১৫.২ ওভারেই জয়ের প্রান্তে পৌঁছে যায় অস্ট্রেলিয়া। আগে ব্যাট করতে নেমে স্বাগতিকদের ভালো শুরু এনে দেন ব্র্যান্ডন কিং। ৪ ছক্কা ও ৩ চারের মারে ৩৬ বলে ৫১ রানের ইনিংস খেলে এই ক্যারিবিয়ান ওপেনার ফেরেন অষ্টম ওভারে। দলের খাতায় তখন রান ৬৩। পরের ওভারেই ফেরেন অধিনায়ক শাই হোপ (৯)। এরপর বিদায়ী ম্যাচে নামা রাসেল বাদে আর কেউ বড় ইনিংস খেলতে পারেননি। ১৫ বলে ৪ ছক্কা ও ২ চারের মারে ৩৬ রানের ইনিংস খেলে শেষবারের মতো আউট হন এ বিধ্বংসী ব্যাটার। অজিদের হয়ে সর্বোচ্চ ৩ উইকেট নেন অ্যাডাম জাম্পা, ২টি করে নেন নাথান এলিস ও গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। তবে জশ ইংলিস ও ক্যামেরন গ্রিনের অপরাজিত ১৩১ রানের জুটিতে বড় লক্ষ্যও সহজেই ছুঁয়ে ফেলে সফরকারী দল। দ্বিতীয় ওভারের শেষ বলেই ১২ রান করে ফেরেন ম্যাক্সওয়েল। অধিনায়ক মিচেল মার্শ ২১ রানের ইনিংস খেলে সাজঘরের পথ ধরলে বাকি কাজটা সেরে ফেলেন ইংলিশ আর গ্রিন। স্রেফ ৫৯ বলে দু’জন মিলে গড়েন ১৩১ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি, যা সীমিত ওভারের ক্রিকেটে তৃতীয় উইকেটে অস্ট্রেলিয়ার সর্বোচ্চ। আগেরটি ছিল ম্যাক্সওয়েল আর অ্যারন ফিঞ্চের ১১৮, ২০১৪ বিশ্বকাপে মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে পাকিস্তানের বিপক্ষে। ৩৩ বলে ব্যক্তিগত ৭৮ রানের ইনিংসে ৫টি ছক্কার সঙ্গে ৭টি চার মারেন ইংলিস। আর ৩২ বলে ৫৬ রান করতে গ্রিন মারেন ৪টি ছক্কা ও ৩টি চার। ইংলিস ম্যাচসেরা হলেও উপলক্ষের কেন্দ্রবিন্দুতে অনুমিতভাবে ছিলেন রাসেলই। স্বভাবতই শেষ ম্যাচটা তিনি রাঙান ভক্তদের ছবি আর অটোগ্রাফের আবদার পূরণ করে। পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে কথা বলতে গিয়ে গলা ভারী হয়ে আসে এই ৩৭ বছর বয়সী ক্রিকেটারের। বলেন, ম্যাচের ফল আমাদের পক্ষে আসেনি। তবে এটিই ক্রিকেট। দিন শেষে আমি খুশি। গত দুই ম্যাচে দর্শকরা অসাধারণ ছিল। আমরাও নিজেদের সেরাটা দেয়ার চেষ্টা করেছি। ঘরের মাঠে শেষ ম্যাচ খেলতে পারার আনন্দে কৃতজ্ঞতা জানিয়ে রাসেল আরও বলেন, স্যাবাইনা পার্কে আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার শেষ করতে পেরেছি।
স্থানীয় দর্শক, পরিবার ও বন্ধুদের সামনে খেলেছি। এ সুযোগ করে দেয়ায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেট বোর্ডকে ধন্যবাদ।’ সিরিজের তৃতীয় ম্যাচটি গড়াবে বাংলাদেশ সময় আগামী শনিবার, সেন্ট কিটসে।