শোনা যাচ্ছে, পোলো খেলার সময় মৌমাছি গিলে ফেলার কারণে মৃত্যু হয়েছে সঞ্জয় কাপুরেরছবি: সোনা কোয়ো স্টিয়ারিটং সিসেস্টমসের ওয়েবসাইট থেকে

মৌমাছি গিলেই কি মৃত্যু হলো এই বিলিয়নিয়ারের

গত ১২ জুন ভারতীয় ধনকুবের সঞ্জয় কাপুরের আকস্মিক মৃত্যু হয় যুক্তরাজ্যে। মৃত্যুর সময় তিনি পোলো খেলছিলেন। বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, খেলার মধ্যে তাঁর মুখে একটি মৌমাছি ঢুকে যায়। আর এরপর মারা যান তিনি। সত্যিই কি মৌমাছি গিলে ফেলার কারণে মৃত্যু হয়েছিল তাঁর?
ধারণা করা হচ্ছে, মৌমাছি মুখে ঢুকে যাওয়ার কারণেই সঞ্জয়ের হার্ট অ্যাটাক হয়। তিনি ছিলেন ভারতের একটি গাড়ির যন্ত্রাংশ প্রস্তুতকারক কোম্পানির চেয়ারম্যান। তাঁর মৃত্যুর কারণ জানতে প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে কথা বলেছিল ফক্স নিউজ ডিজিটাল। তবে তাঁদের কাছ থেকে নিশ্চিত কোনো উত্তর মেলেনি।

এই ধনকুবেরের স্ত্রী ছিলেন বলিউড অভিনেত্রী কারিশমা কাপুর। ১১ বছরের দাম্পত্য শেষে যে সম্পর্ক বিচ্ছেদে গড়ায়।

ভারতের হৃদ্‌রোগ–বিশেষজ্ঞ নিশান্ত কালরা সংবাদমাধ্যমটিকে বলেন, ‘ফরেনসিক রিপোর্ট ছাড়া এ সম্পর্কে মন্তব্য করা সম্ভব নয়। মৌমাছি গিলে ফেলার ফলে একজন মানুষের হার্ট অ্যাটাক হতে পারে। তবে এ ঘটনা অত্যন্ত বিরল। আর সেটির পেছনেও নির্দিষ্ট কারণ থাকে।’
বিশেষজ্ঞ নিশান্ত কালরা আরও জানান, এমন বিরল ক্ষেত্রেও মৌমাছি গিলে ফেলাটাই মৃত্যুর প্রত্যক্ষ কারণ নয়, মৌমাছি মুখের ভেতর চলে গেলে শ্বাসনালির ওপরের অংশ কিংবা মুখের পেছন দিকটায় মৌমাছির হুল ফুটে যেতে পারে।

এভাবে তখন শরীরে মৌমাছির বিষ মিশে যেতে পারে। এ বিষে কারও অ্যালার্জি থাকলে দেহে মারাত্মক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। ফলে ওই ব্যক্তির রক্তচাপ অনেক কমে যায়, হৃৎপিণ্ডের স্বাভাবিক ছন্দের পতন ঘটে, হার্ট অ্যাটাকের মতো সমস্যাও হতে পারে।

দ্য আমেরিকান একাডেমি অব অ্যালার্জি, অ্যাজমা অ্যান্ড ইমিউনোলজিও বলছে, যদি কোনো পতঙ্গের বিষের প্রতি কারও অ্যালার্জি থাকে, তাহলে তাঁর মারাত্মক ধরনের প্রতিক্রিয়া হতে পারে। এক্ষেত্রে হৃৎপিণ্ডে রক্তপ্রবাহ কমে যেতে পারে, হৃৎপিণ্ডের ছন্দপতন ঘটতে পারে। বুঝতেই পারছেন, এভাবে মৃত্যু হতে পারে একজন ব্যক্তির।
হৃদ্‌রোগ থাকলেও অ্যালার্জির প্রতিক্রিয়ার ক্ষেত্রে এমন গুরুতর কিছু ঘটার আশঙ্কা থাকে। আবার হৃদ্‌রোগ না থাকলেও কেবল অ্যালার্জি থাকার কারণেও হুট করে এ ধরনের মারাত্মক প্রতিক্রিয়া হতে পারে। অবশ্য এ ধরনের ঘটনার সংখ্যা নিতান্তই কম। অধিকাংশ মানুষের ক্ষেত্রেই শরীরের যেকোনো স্থানে মৌমাছি বা অন্যান্য পতঙ্গের হুল ফুটলে কেবল ওই জায়গায় কিছু প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। রক্তচাপ, হৃৎপিণ্ডের ছন্দ বা হৃৎপিণ্ডের রক্তপ্রবাহের ওপর কোনো প্রভাব পড়ে না। হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকিও থাকে না।

তবে মৌমাছি মুখে চলে গেলে বিপত্তি বাধতে পারে যে কারও ক্ষেত্রে। মুখের ভেতরে মৌমাছি ঢোকার পর মুখের পেছনের অংশে হুল ফুটে যাওয়ার ফলে যদি ওই অংশ খুব বেশি ফুলে যায়, সে ক্ষেত্রে শ্বাসপ্রশ্বাস বাধাগ্রস্ত হতে পারে। এ ঘটনাও ঝুঁকির কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।

তবে ৫৩ বছর বয়সী সঞ্জয় কাপুর পরোক্ষভাবে মৌমাছির কারণেই মারা গেলেন কি না, তা কোনো সূত্রই নিশ্চিত করতে পারেনি।

সূত্র: ইয়াহু নিউজ