স্ট্রোকের ঝুঁকি ১৭ শতাংশ কমাতে পারে এই ভিটামিন
হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোকে বিশ্বজুড়ে মৃত্যুর হার বাড়ছে। এর অন্যতম কারণ খাদ্যাভ্যাস ও জীবনযাপনের ধরন; কিন্তু সাম্প্রতিক এক গবেষণা বলছে, প্রতিদিনের ভালো খাদ্যাভ্যাস ও সঠিক জীবনযাপনের পাশাপাশি একটি নির্দিষ্ট ভিটামিন গ্রহণ করলে এই ঝুঁকি অনেকটা কমানো সম্ভব।
গবেষকেরা বলছেন, ভিটামিন ডি নিয়মিত গ্রহণ করলে স্ট্রোকসহ বড় ধরনের হৃদ্রোগের ঝুঁকি প্রায় ১৭ শতাংশ কমে যেতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সাময়িকী নিউট্রিয়েন্টস-এ প্রকাশিত এক গবেষণায় দেখা গেছে, ভিটামিন ডি হৃদ্রোগ প্রতিরোধে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখতে পারে। গবেষকেরা ভিটামিন ডি নিয়েছেন বা নেননি, এমন ব্যক্তিদের মধ্যে পার্থক্য বিশ্লেষণ করে এ ধরনের কিছু ফলের কথা জানিয়েছেন।
এই ভিটামিন খাবার থেকে খুব বেশি পাওয়া যায় না। ভিটামিন ডির প্রধান উৎস সূর্যের আলো। যখন আমাদের ত্বকে সরাসরি রোদে পড়ে, তখন শরীরে স্বাভাবিকভাবে ভিটামিন ডি তৈরি হয়। তবে যাঁরা রোদে কম বের হন, আবহাওয়ার কারণে নিয়মিত সূর্যের আলো পান না, তাঁদের ক্ষেত্রে শরীরে এর ঘাটতি দেখা দিতে পারে। এ ছাড়া বয়স, গায়ের রং, শরীরের চর্বির পরিমাণ ইত্যাদিও ভিটামিন ডি শোষণে প্রভাব ফেলে।
ভিটামিন ডি ও হৃদ্রোগ–সম্পর্কিত বিভিন্ন গবেষণার তথ্য বিশ্লেষণ করে বেশ কয়েকটি বিষয় নজরে এসেছে। এর মধ্যে আছে—
১. অন্তঃসত্ত্বা নারীরা ভিটামিন ডি গ্রহণ করলে প্রি–এক্ল্যাম্পশিয়ার ঝুঁকি ৬০ ভাগ, গর্ভকালীন ডায়াবেটিস ৫০ ভাগ ও অকাল প্রসবের ঝুঁকি ৪০ ভাগ পর্যন্ত কমে আসে।
২. প্রি–ডায়াবেটিক রোগীদের ক্ষেত্রে হৃদ্রোগের ঝুঁকি কমে যেতে পারে।
৩. যেসব ব্যক্তি স্ট্যাটিন–জাতীয় ওষুধ গ্রহণ করেন বা হৃদ্রোগ প্রতিরোধে ওষুধ খাচ্ছেন, তাঁরা ভিটামিন ডি গ্রহণ করলে হৃদ্রোগের ঝুঁকি ১৩–১৭ শতাংশ কমতে পারে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভিটামিন ডির ঘাটতি নির্ধারণের সবচেয়ে ভালো উপায় হলো রক্ত পরীক্ষা। তবে যাঁদের রোদে বের হওয়ার সুযোগ কম এবং যাঁরা ভিটামিন ডি–সমৃদ্ধ খাবার (ডিমের কুসুম, চর্বিযুক্ত মাছ, মাশরুম, দুধ ইত্যাদি) খান না, তাঁদের ঘাটতির আশঙ্কা বেশি থাকে। হৃদ্স্বাস্থ্য সুরক্ষায় পর্যাপ্ত ঘুম, সুষম খাদ্য, মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ ও শারীরিক পরিশ্রমের পাশাপাশি ভিটামিন ডি গ্রহণও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে। রোদে বের হওয়ার পাশাপাশি খাদ্যতালিকায় ভিটামিন ডি–সমৃদ্ধ খাবার যোগ করুন। তবে জেনে রাখুন, ভিটামিন ডি একটি ফ্যাট-সলুয়েবল ভিটামিন অর্থাৎ অতিরিক্ত মাত্রায় গ্রহণ করলে এটি শরীরে জমা হয়ে শেষ পর্যন্ত প্রাণঘাতীও হতে পারে। তাই ভিটামিন ডি সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ করার আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
সূত্র: ইয়াহু নিউজ