বাংলাদেশে আসছেন আইসিসি বর্ষসেরা আম্পায়ার সাইমন টফেল
বাংলাদেশি আম্পায়ারদের দক্ষতা উন্নয়নে বড় পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। এজন্য আইসিসির এলিট প্যানেলের সাবেক আম্পায়ার সাইমন টফেলকে ৩ বছরের জন্য নিয়োগ দিতে যাচ্ছে বিসিবি। ঘরোয়া ক্রিকেটে আম্পায়ারদের ভুল যেন নিয়মিত চিত্র হয়ে দাঁড়িয়েছে। এসব ভুল যতটা না পক্ষপাতমূলক, তার চেয়ে বেশি অদক্ষতার কারণে। দেশি আম্পায়ারদের দক্ষতা বৃদ্ধির উদ্যোগ নিতেই টফেলকে নিয়ে আসা হচ্ছে। বোর্ড মিটিং শেষে এমনটাই জানিয়েছেন, আম্পায়ারিং কমিটির চেয়ারম্যান ইফতেখার আহমেদ মিঠু। মিঠু গণমাধ্যমকে বলেছেন, ‘আমরা অনেকদিন ধরেই টফেলের সাথে যোগাযোগ করেছি। তিনি খুব ব্যস্ত। অবশেষে তিনি আসতে রাজি হয়েছেন। যদিও এখনও চুক্তি হয়নি। তবে সব কিছুই চূড়ান্ত। আগামী তিন বছর তিনি ও তার টিম বাংলাদেশের কাজ করবেন। আশা করি, তার মাধ্যমে আমাদের আম্পায়াররা উপকৃত হবেন।’ তিনি আরও জানান, ‘টোফেলের সঙ্গে তিন বছরের পরিকল্পনায় কাজ হবে তিনটি ধাপে। প্রথম ধাপে ১০-১৫ জন আম্পায়ার ট্রেনার তৈরি করা হবে, যারা সারা দেশে আম্পায়ারদের প্রশিক্ষণে নিয়োজিত থাকবেন। পুরো প্রোগ্রামের নেতৃত্বে থাকবেন টোফেল নিজেই, যদিও তার প্রতিনিধিরাও কাজ করবেন। সময়-সময়ে তিনি নিজেও বাংলাদেশে এসে প্রশিক্ষণ কার্যক্রমে অংশ নেবেন।’ চুক্তিটি এখনো স্বাক্ষর হয়নি, তবে সব কিছু চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে বলে জানিয়েছেন মিঠু। চুক্তি স্বাক্ষরের পর বিস্তারিত পরিকল্পনা গণমাধ্যমের সামনে উপস্থাপন করা হবে। খেলোয়াড় হিসেবে খুব নাম কামাতে না পারলেও আম্পায়ার হিসেবে সুনাম অর্জন করেছেন টফেল। ২০০৩ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত আইসিসির এলিট প্যানেলের আম্পায়ার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। ১৯৯৯ সালে তিনি প্রথম আন্তর্জাতিক ওয়ানডে ম্যাচে আম্পায়ারিং করেন এবং ২০০০ সালে টেস্ট আম্পায়ারিংয়ের সুযোগ পেয়ে যান। দক্ষতা এবং বিশ্বাসযোগ্যতার কারণে ২০০৩ সালে আইসিসির এলিট প্যানেলে অন্তর্ভুক্ত হন সাবেক এই অজি ক্রিকেটার। ২০০৪ থেকে ২০০৮ পর্যন্ত টানা পাঁচবার তিনি আইসিসির আম্পায়ার অব দ্য ইয়ার পুরস্কার জিতেছেন। মোট ৭৪টি টেস্ট, ১৭৪টি ওয়ানডে এবং ৩৪টি আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে আম্পায়ারিং করেছেন তিনি। সোমবারের লম্বা বোর্ড মিটিংয়ে অনেক গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। তার মধ্যে একটি হচ্ছে প্রায় ১৯ বছর আগে হওয়া অ্যাওয়ার্ড নাইট চালু করা। বোর্ড সভা শেষে বুলবুল এমন সিদ্ধান্তের কথা জানান। এই অ্যাওয়ার্ড প্রথা চালু আছে ভারত, অস্ট্রেলিয়া, সাউথ আফ্রিকা ও নিউজিল্যান্ডের মতো দেশে। সাধারণত বছর শেষে ক্রিকেটারদের পারফরম্যান্স মূল্যায়ন করে এসব পুরস্কার তুলে দেয়া হয়।
কে এই সাইমন টোফেল?
১৯৯৯ সালে আন্তর্জাতিক ওয়ানডেতে অভিষেক হয় টোফেলের। এরপর ২০০০ সালে টেস্টেও আম্পায়ারিং শুরু করেন তিনি। ২০০৩ সালে আইসিসির এলিট প্যানেলে অন্তর্ভুক্ত হন এবং টানা পাঁচবার (২০০৪-২০০৮) আইসিসির বর্ষসেরা আম্পায়ারের স্বীকৃতি পান এই অজি। ২০০৩ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত তিনি ছিলেন বিশ্ব ক্রিকেটের সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য আম্পায়ারদের একজন। ৭৪টি টেস্ট, ১৭৪টি ওয়ানডে এবং ৩৪টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ পরিচালনার অভিজ্ঞতা রয়েছে তার। অ্যাশেজ সিরিজ থেকে শুরু করে বিশ্বকাপের বড় ম্যাচগুলোতেও দায়িত্ব পালন করেছেন দক্ষতার সঙ্গে।