ভারতের বাংলাদেশ সফর নিয়ে ইতিবাচক আলোচনা চলছে ---------বুলবুল

ভারতের বাংলাদেশ সফর নিয়ে ইতিবাচক আলোচনা চলছে ---------বুলবুল

আগস্টে বাংলাদেশ সফরে ৩টি ওয়ানডে ও ৩টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলার কথা ছিল ভারতের। কিন্তু হঠাৎ করেই সিরিজটি পেছানোর প্রস্তাব দিয়েছে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড (বিসিসিআই)। সিরিজ পেছানোর কারণ হিসেবে স্পষ্ট করে কিছু না জানা গেলেও ধারণা করা হচ্ছে, বর্তমানে দুই দেশের রাজনৈতিক টানাপোড়েনে এমন সিদ্ধান্ত নিচ্ছে তারা। যদিও বিসিবি সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল জানিয়েছেন, ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের সাথে ইতিবাচক আলোচনার খবর। সোমবার বিসিবি সভা শেষে বুলবুল জানিয়েছেন, এই সিরিজ নির্ধারিত সময়ে আয়োজন করতে ভারতের সঙ্গে আলোচনা করছেন তারা, ‘আগস্ট-সেপ্টেম্বর হিসাব না, এই সিরিজ কীভাবে আয়োজন করা যায় সেটা নিয়ে আলোচনা করা হচ্ছে। কোনওভাবে নির্ধারিত তারিখে করতে না পারলে পরবর্তী সম্ভাব্য উইন্ডোতে হবে। ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড বেশ পেশাদার। তারা এখনও ইতিবাচক, আলোচনা চলমান।’ বিসিবির সভাপতি বুলবুল জানান, বর্তমানে ভারতীয় দল ইংল্যান্ড সফরে রয়েছে, যার কারণে সময়মতো সিরিজ আয়োজন সম্ভব হচ্ছে না। এছাড়া আরও কিছু প্রশাসনিক ও লজিস্টিক কারণে এই পরিবর্তন আসছে। ভারত-বাংলাদেশ সিরিজ মানেই ভক্তদের মাঝে বাড়তি উন্মাদনা। ফলে হঠাৎ করে সিরিজ পিছিয়ে যাওয়ায় হয়তো হতাশা জাগবে ক্রিকেটপ্রেমীদের মাঝে। তবে সিরিজ স্থগিত হওয়ার প্রকৃত কারণ এখনো পরিষ্কার না হওয়ায় তৈরি হয়েছে ধোঁয়াশা। বিসিবি জানিয়েছে, সিরিজটি বাতিল হয়নি, বরং নতুন তারিখ নির্ধারণের বিষয়ে দুই দেশের বোর্ডের মধ্যে আলোচনা চলছে। খুব শিগগিরই সংশোধিত সূচি ঘোষণা করা হবে বলেও জানানো হয়েছে। গত এপ্রিলে প্রকাশিত সূচি অনুযায়ী ১৩ আগস্ট ঢাকায় আসার কথা ভারতীয় ক্রিকেট দলের। এরপর ১৭ তারিখ মিরপুরে প্রথম ওয়ানডে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডে অনুষ্ঠিত হবে একই ভেন্যুতে ২০ আগস্ট। এরপর দুই দল শেষ ওয়ানডে খেলতে চট্টগ্রামে যাবে। সেখানে ওয়ানডে শেষে প্রথম টি-টোয়েন্টিতে ২৬ আগস্ট মাঠে নামবে দুই দল, এই ম্যাচের ভেন্যুও চট্টগ্রামের বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মতিউর রহমান স্টেডিয়ামে (সাবেক জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়াম)। এরপর সিরিজের শেষ দুটি টি-টোয়েন্টি অনুষ্ঠিত হবে মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে। এছাড়া প্রায় ১৯ বছর পর আবারও অ্যাওয়ার্ড নাইট আয়োজন করার ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। যা সর্বশেষ ২০০৬ সালে অনুষ্ঠিত হয়, তবে সেটার ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে পারেনি বিসিবি। তবে সেই প্রথা আবারও শুরু করতে চায় বিসিবি। বিসিবির সভায় এই পুরস্কার প্রদানের রীতি চালুর সিদ্ধান্ত হয়েছে। পুরস্কার প্রদানের এই প্রথা চালু আছে ভারত, অস্ট্রেলিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা ও নিউজিল্যান্ডের ক্রিকেট বোর্ডে। সাধারণত বছর শেষে ক্রিকেটারদের পারফরম্যান্স মূল্যায়ন করে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে এই পুরষ্কার তুলে দেওয়া হয়। ক্রিকেটারদের পারফরম্যান্সের স্বীকৃতি দিতেই এই অ্যাওয়ার্ড নাইট আয়োজনের ঘোষণা দিয়েছেন বিসিবি সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল। শুধু এক বছর নয়, অন্তত আগামী ৪-৫ বছর পুরস্কার দেওয়ার নিয়ম চালু রাখার জন্য পরিকল্পনা তৈরি করছে বিসিবি। যেখানে ক্রিকেটারদের সঙ্গে সাংবাদিক, গ্রাউন্ডস কর্মীদেরও পারফরম্যান্সও মূল্যায়ন হতে পারে। এ প্রসঙ্গে বুলবুল বলেন, ‘আমরা আবার অ্যাওয়ার্ড নাইট চালু করব। শুধু এক বছরের জন্য নয়, আমরা একটা চুক্তিতে আসব কীভাবে পুরস্কারগুলো দেবো। সেজন্য আমরা ৪-৫ বছরের একটা পরিকল্পনা করছি।’ তিনি আরও বলেন, ‘এটা আমাদের প্রোগ্রামেরই একটা অংশ। হাইপারফরম্যান্স ফর অলÑএটার সঙ্গে হচ্ছে খেলোয়াড়দের মনোবল বৃদ্ধি করা বা তাদের আত্মবিশ্বাস বাড়ানোর জন্য (লক্ষ্য থাকবে)। ক্রিকেট সংশ্লিষ্ট যারা আছেন সকলের মনোবল বৃদ্ধি করার জন্য আমরা একটা ক্রিকেটে এই পুরস্কার দেবো।’ বিসিবি আরও কিছু সিদ্ধান্ত নিয়েছে বোর্ড সভায়। ডিসেম্বরে বিপিএল শুরুর সিদ্ধান্ত ছাড়াও বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। প্রতিবছর জাতীয় দলের পুরুষ ও নারী ক্রিকেটারদের অর্জন মূল্যায়নের জন্য ‘ক্রিকেটার্স অ্যাওয়ার্ড নাইট’ আয়োজন করবে বিসিবি। নারী দলের জন্য একজন নারী নির্বাচক নিয়োগের সিদ্ধান্ত হয়েছে; যা এই প্রথমবারের মতো হতে যাচ্ছে। খেলোয়াড়দের পেশাদার মানসিকতা ও ব্যবস্থাপনা উন্নয়নে ‘অ্যাথলেটস ম্যানেজমেন্ট প্রোগ্রাম’ চালু করারও সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিসিবি। এছাড়া ভারতের বেঙ্গালুরেতে অবস্থিত বিসিসিআইয়ের সেন্টার অব এক্সিলেন্সের আদলে পূর্বাচলে হাই পারফরম্যান্স সেন্টার তৈরি করা হবে। এটি পূর্বাচলের মাস্টারপ্ল্যানের সঙ্গে সমন্বয় করে নির্মাণ করা হবে। এর বাইরে ক্রিকেটারদের জন্য কোচিং এডুকেশন সিস্টেম চালু করবে বাংলাদেশের ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থা।