ছবি : সংগৃহীত

‘শিবির থেকে ছাত্রদলেও পদায়ন হয়’ — শরীফ উদ্দিনের বিস্ফোরক মন্তব্য

ছাত্রশিবিরের একটি ইসলামী সংগীতে মডেলিং করার অভিযোগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) শাখা ছাত্রদলের ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক শরীফ উদ্দিন সরকারকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করেছে ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদ। বহিষ্কারের দুই দিন পর বৃহস্পতিবার (২ জুলাই) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে নিজের অবস্থান ব্যাখ্যা করেছেন তিনি।

শরীফ উদ্দিন বলেন, “সাত বছর আগে একটি ইসলামী সংগীতে অংশ নিই, তখন আমি মাদ্রাসার আলিম শ্রেণিতে অধ্যয়নরত ছিলাম। সে সময় আমার কোনো রাজনৈতিক চিন্তাধারা বা যুক্ততা ছিল না। আমি শুধু শিল্পী হিসেবে অংশ নিই। সংগীতটির শুটিং চলাকালে আমি জানতাম না এটি ছাত্রশিবিরের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট।”

তিনি দাবি করেন, “যে প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে আমি সংগীতে অংশ নিই, সেটি ছিল ‘মল্লিক একাডেমি’ নামে একটি প্রতিষ্ঠান। তখন প্রতিষ্ঠানটি বিভিন্ন টিভি চ্যানেলেও অনুষ্ঠান করত এবং প্রকাশ্যেই কাজ করত, তাই এটি শিবিরের সংগঠন বলে বোঝা যায়নি।”

শরীফ উদ্দিন বলেন, “যেহেতু আমি গ্রাম থেকে উঠে আসা একজন মাদ্রাসা ছাত্র এবং তখনকার রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট সম্পর্কে সচেতন ছিলাম না, তাই বুঝে-শুনে অংশগ্রহণ করিনি। পরবর্তীতে এইচএসসি পরীক্ষা শেষে মল্লিক একাডেমি থেকে সরে আসি এবং তাদের সঙ্গে যোগাযোগও রাখিনি।”

ছাত্রদলে যুক্ত হওয়ার বিষয়টি ব্যাখ্যা করতে গিয়ে তিনি বলেন, “২০১৮ সালে ঢাবিতে ভর্তি হওয়ার পর কোটা সংস্কার আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশ নেই। পরে ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে পরিচয় হয় এবং ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে আমি আনুষ্ঠানিকভাবে ছাত্রদলের রাজনীতিতে সক্রিয় হই। এরপর থেকে ছাত্রদলের বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছি এবং একাধিকবার হামলার শিকার হয়েছি।”

বহিষ্কারের বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে শরীফ উদ্দিন বলেন, “আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হলেও আত্মপক্ষ সমর্থনের কোনো সুযোগ দেওয়া হয়নি। অথচ ছাত্রদলের অনেক নেতাকর্মী একসময় ছাত্রলীগ বা অন্যান্য সংগঠনে যুক্ত ছিলেন, পরে আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে ছাত্রদলে যোগ দিয়েছেন।”

তিনি অভিযোগ করেন, “ঢাবির কবি জসিম উদ্দিন হলের একজন ছাত্রদল নেতা ছিলেন ছাত্রশিবিরের সাবেক সেক্রেটারি এবং বর্তমানে কেন্দ্রীয় সংসদেও পদায়িত হয়েছেন। এটি ছাত্রদলে ওপেন সিক্রেট। অথচ আমাকে শুধুমাত্র একটি ভিডিও ক্লিপ দেখিয়ে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হলো।”

ছাত্রদলের রাজনীতিতে নিজের ভূমিকার কথা তুলে ধরে শরীফ উদ্দিন বলেন, “আমি ছাত্রলীগের দমন-পীড়নের মুখে ছাত্রদলের পতাকা ধরে রেখেছি। অনেক রিস্ক নিয়েছি, জীবন-মৃত্যুর ঝুঁকি নিয়ে মাঠে থেকেছি। ছাত্রদলের অনেক সিনিয়র নেতা-সহকর্মী এর সাক্ষী।”

এ বিষয়ে ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদের কোনো মন্তব্য এখনো পাওয়া যায়নি।